ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে এ ক্যাম্পাস

ছবি: ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সৌজন্যে

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ ছিলেন একজন দূরদর্শী স্বপ্নবান মানুষ। তিনি এমন একটি ইউনিভার্সিটি চেয়েছিলেন যেখানে মহৎ সব মানুষ যেভাবে শিক্ষা আর মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতেন সেই ধরনের একটা শিক্ষার পরিবেশ তৈরি হয়।

যেমন মহান দার্শনিক প্লেটোর একাডেমি কিংবা নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে শিক্ষা আর মুক্তচিন্তার চর্চা হয়েছে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে। স্যার ফজলে মনে করতেন শুধু ইট, কাঠ, পাথরের আধুনিক কাঠামো বানালেই হবে না, তার সঙ্গে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা যোগ করতে হবে। প্রকৃতির কাছে থাকতে হবে, শিখতে হবে প্রকৃতি থেকে। তৈরি করতে হবে একটি মনোরম পরিবেশ। ব্র্যাকের নতুন ক্যাম্পাস এখন শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে উঠছে। এ ইট-পাথরের শহরে তারা নতুন ক্যাম্পাসে প্রাণভরে নিশ্বাস নিচ্ছে আর পড়াশোনা করছে।

প্রথম যখন আমরা মেরুল বাড্ডার এ জায়গা ক্যাম্পাসের জন্য নির্বাচন করি, তখন এটি ছিল বড় একটি ডোবা। ডোবাকে আজ রূপান্তর করা হয়েছে শুধু বাংলাদেশ নয়, এ অঞ্চলের অন্যতম পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস হিসেবে। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের এমন একটা অভিজ্ঞতা দিতে চেয়েছি, তারা যেন অনুভব করতে পারে, আমাদের শত সীমাবদ্ধতার মাঝেও প্রকৃতির কথা ভুলে গেলে চলবে না। 

শিক্ষার্থীরা যখন দেখবে এ ক্যাম্পাসে বৃষ্টির পানিকে রেইন চেইন আর বায়োটোপ দিয়ে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা হয়, সৌরশক্তি দিয়ে এ ভবনের বিদ্যুতের চাহিদা অনেকটুকুই পূরণ করা হয়, ভবনের গায়ে সবুজ চাদরের মতো লেগে থাকা গাছগুলো অক্সিজেন দেয়, হাইব্রিড কুলিং সিস্টেম ক্লাসের ভেতরে বিশুদ্ধ বাতাস নিয়ে আসছে, অনেকটা সময় ক্লাসে বসে থাকলেও ক্লান্তি আসে না। শিক্ষার্থীরা যখন দেখবে দখিনা বাতাসকে অ্যারো ডায়নামিক ফিন দিয়ে ভবনের ভেতরে আনা হচ্ছে তখন তাদের মনোভাব বদলে যাবে আমার বিশ্বাস। ভবিষ্যতে তারা যেকোনো কাজ করতে গেলে প্রকৃতির যত্ন নেবে, প্রকৃতিকে মন-মননে ধারণ করবে। জীবনকে নতুন লেন্সে দেখবে। এতদিন তারা যে কথাগুলো তাত্ত্বিকভাবে পড়েছে, এখন তারা সেগুলোর অভিজ্ঞতা লাভ করার সুযোগ পাবে। আমরা এ নতুন ক্যাম্পাসকে এমনভাবে তৈরি করেছি যেন এটি পয়েন্ট অব রেফারেন্স হয়ে ওঠে শিক্ষার্থী ও এক্সপার্টদের জন্য।

যেকোনো কাজ করতে অনুপ্রেরণা লাগে। আমাদের ক্যাম্পাস তৈরি করতে আমরা অনুপ্রেরণা নিয়েছি সুন্দরবন থেকে। একদম শুরু থেকে স্যার ফজলে হাসান সিঙ্গাপুর, জার্মানি, চীন, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্বসেরা ডিজাইনার, নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ও ক্লাইমেট ইঞ্জিনিয়ারদের যুক্ত করেছিলেন। তাদের সবার সম্মিলিত চেষ্টার ফল আজকের এ নতুন ক্যাম্পাস। 

তামারা হাসান আবেদ

চেয়ারপারসন, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন