সোমবার দুপুর থেকে অপ্রত্যাশিত ঝড়ের কবলে পড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট। তিন দিনব্যাপী একের পর এক নানা নাটকীয়তা ও দৃষ্টান্তের জন্ম দিয়ে সেটি থেমেছে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে। এর মাঝে ঘটে গেছে অনেক কিছু। ক্রিকেটারদের ১১ দফা (পরে নতুন আরো দুটি দাবি সংযুক্ত করেন ক্রিকেটাররা) নিয়ে সোস্যাল মিডিয়া থেকে চায়ের কাপে ঝড় উঠেছে, কথা হয়েছে টেলিভিশনের টকশোতেও। অবশেষে পুরো ঘটনার সারমর্ম হচ্ছে, বিসিবি ক্রিকেটারদের বেশির ভাগ দাবিই মেনে নিয়েছে। ক্রিকেটারদের প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ দলের টেস্ট ও টি২০ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন বিসিবির সঙ্গে নিজেদের সংলাপ নিয়ে। বলেছেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।
এসব দাবি বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়ও অবশ্য একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউ কেউ। অনেকগুলো দাবিদাওয়ার ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলাও হয়নি। যদিও বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন নিজেদের আওতায় থাকা দাবিগুলো মেনে নেয়ার কথা বলেছেন বারবার। সব দাবি যে ‘আজকেই’ বাস্তবায়ন সম্ভব তা-ও নয়। হয়তো একটা প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে সেসব বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে যাবে। তবে ঠিক দাবি আকারে না এলেও প্রথম দিন সংবাদ সম্মেলনে দাঁড়িয়ে ক্রিকেটাররা যে ‘সম্মান’ না পাওয়ার কথা বলেছিলেন, তার কোনো সমাধান স্পষ্ট হয়নি। বরং গত তিনদিনের ঘটনাবলি কিন্তু ইঙ্গিত দিচ্ছে ভিন্ন কিছুরই।
সোমবার মিরপুরে সাংবাদিকদের সামনে প্রথম দাবিটি তুলে ধরেন নাঈম ইসলাম। দীর্ঘদিন জাতীয় দল থেকে দূরে থাকা এ সিনিয়র ক্রিকেটার দাবি পেশ করার আগেই বলেন, ‘আমাদের খেলোয়াড়দের কিছু সমস্যা আছে, কিছু দাবিদাওয়া আছে, যে জিনিসগুলো আপনাদের মাধ্যমে আমরা জানাতে চাই। প্রথমে বলতে চাই আমাদের সম্মানের বিষয়ে। আমরা যতজন খেলোয়াড় আছি, আমাদের যতটা সম্মান প্রাপ্য, মনে হয় না ততটা সম্মান আমরা পাই।’
এভাবেই সেদিন শুরু হয়েছিল সংবাদ সম্মেলন। এরপর একে একে ১১ দফা দাবি পড়ে শোনান ১০ জন ক্রিকেটার। সব শেষে জানানো হয়, যতদিন এসব দাবি মেনে নেয়া না হবে, ততদিন পর্যন্ত ক্রিকেট থেকে বিরত থাকবেন খেলোয়াড়রা। এসব দাবিদাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তাত্ক্ষণিকভাবে সেদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন। তিনি বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের জানানো হয়নি। আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি। বিষয়টা যত তাড়াতাড়ি সমাধান করা যায়, আমরা দেখব।’ প্রধান নির্বাহীর এমন নমনীয় অবস্থান বিষয়টা দ্রুত সমাধানের ইঙ্গিত দিলেও পরিস্থিতি ঘোলাটে হয় পরদিন বিসিবি প্রধানের সংবাদ সম্মেলনের পর। ক্রিকেটারদের এসব দাবিদাওয়াকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে আখ্যা দিয়ে তিনি