৪৬তম শিরোপায় আরো উঁচুতে মেসি

ক্রীড়া ডেস্ক

সাপোর্টার্স শিল্ড শিরোপা নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভেসেছেন ইন্টার মায়ামির মেসি, সুয়ারেজ, বুসকেটসরা ছবি: ইন্টার মায়ামি

ট্রফি জিতেই চলেছেন লিওনেল মেসি। পেশাদার ফুটবলে জিতলেন রেকর্ড ৪৬তম শিরোপা। বুধবার ইন্টার মায়ামি ৩-২ গোলে হারায় কলম্বিয়া ক্রুকে। এ ম্যাচে জোড়া গোল করেন মেসি। তার বন্ধু লুই সুয়ারেজ করেন বাকি গোলটি। এ জয়ে সাপোর্টার্স শিল্ড শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যায় মায়ামির। 

সাপোর্টার্স শিল্ড কী? যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে অংশ নেয় মোট ২৯টি দল। ইস্টার্স কনফারেন্স লিগে ১৫টি ও ওয়েস্টার্ন কনফারেন্স লিগে ১৪টি দল লড়াই করে। প্রতি বছর যে দলের ঘরোয়া মৌসুম সবচেয়ে ধারাবাহিক কাটে তারাই এ ট্রফি জেতে। ৩২ ম্যাচে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে এবার সাপোর্টার্স শিল্ড জিতে নিল মায়ামি। লিগস কাপের পর মায়ামির হয়ে এটা মেসির দ্বিতীয় ট্রফি।

এখন পর্যন্ত ১৬টি ভিন্ন দল সাপোর্টার্স শিল্ড জিতেছে এবং সর্বোচ্চ চারবার এ শিরোপা জিতেছে ডিসি ইউনাইটেড। এ জয়ের ফলে মেজর লিগ সকারের প্লে-অফে ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা পাবে মায়ামি। সেই সঙ্গে নিয়মিত মৌসুমে সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাওয়ার হাতছানি মায়ামির সামনে।

পাশাপাশি অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ‘রাউন্ড ওয়ান’-এর খেলা হবে। মায়ামি সেই সিরিজ় জিততে পারলে মৌসুমের বাকি সবক’টি ম্যাচ ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা পাবে। তার মধ্যে রয়েছে ইস্টার্ন কনফারেন্স সেমিফাইনাল, ইস্ট ফাইনাল ও এমএলএস কাপ ফাইনাল।

মায়ামির সাপোর্টার্স শিল্ড শিরোপা জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন আর্জেন্টিনার বর্তমান বিশ্ব ও কোপা চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক মেসি। তার জোড়া গোলের পাশাপাশি লক্ষ্যভেদ করেন সুয়ারেজও। মায়ামির গোলকিপার ড্রেক ক্যালেন্ডার শেষ দিকে পেনাল্টি সেভ করে শিরোপা জয়ে অবদান রাখেন। ২০২০ সালে এমএলএসে পা রাখার পর এ টুর্নামেন্টে এটিই মায়ামির প্রথম ট্রফি। 

এমএলএসে ‘সাপোর্টার্স শিল্ড’ দুটি মূল ট্রফির একটি। অন্যটি হলো এমএলএস কাপ। মৌসুমের ৩৪ ম্যাচজুড়ে সবচেয়ে ধারাবাহিক পারফর্ম করা দল পায় ‘সাপোর্টার্স শিল্ড’। লিগে এখনো দুটি ম্যাচ বাকি। এ দুই ম্যাচে জয় পেলে এক মৌসুমে এমএলএসে সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাওয়ার রেকর্ড গড়বে মায়ামি। বর্তমানে ইস্টার্ন কনফারেন্সের শীর্ষ দল মায়ামির পয়েন্ট ৩২ ম্যাচে ৬৮, ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সের শীর্ষ দল এলএ গ্যালাক্সির পয়েন্ট ৩২ ম্যাচে ৬১। মায়ামির নিজেদের শেষ দুটি ম্যাচ হারলেও কোনোভাবেই তাদের আর ছুঁতে পারবে না গ্যালাক্সি। 

চলতি মৌসুমে মায়ামির মোট ৭২টি গোলের ৩৫টিই করেছেন মেসি ও সুয়ারেজ জুটি। চোটের কারণে মায়ামির বেশকিছু ম্যাচ খেলতে পারেননি মেসি। এরপরও তিনি ১৭টি গোল করেছেন, সহায়তা করেছেন আরো ১৫টি গোলে। সদ্যই উরুগুয়ে জাতীয় দল থেকে অবসর নেয়া সুয়ারেজ ক্লাবের হয়ে করেছেন ১৮টি গোল। 

সাপোর্টার্স শিল্ড জয়ের পর মেসির চোখ এখন এমএলএস কাপে। তিনি বলেন, ‘প্রথম উদ্দেশ্য অর্জন হয়েছে, এখন আমাদের সামনে কী আছে তা নিয়ে ভাবতে হবে।’

সাপোর্টার্স শিল্ড জয়ের পর অ্যাপল টিভিকে মেসি বলেন, ‘আমি খুশি। যা করেছি আমরা, তা নিয়ে খুশি। মৌসুমের শুরুতে আমরা জানতাম যে এ শিরোপার জন্য লড়াই করতে পারে এ দল। শুরু থেকেই আমরা নিয়ন্ত্রণ নিয়েছি, লক্ষ্য পূরণের মতো ফুটবলার আমাদের আছে। প্রথম লক্ষ্য পূরণ হলো, আমি খুশি। এখন আমরা তাকাচ্ছি পরেরটিতে।’

২০২৩ সালে মায়ামিতে যোগ দেন মেসি। নতুন এ ক্লাবের হয়ে দুটি শিরোপা মিলিয়ে তার শোকেসে এখন মোট ৪৬ শিরোপা জমল। সর্বোচ্চ ৩৫ শিরোপা জিতেছেন বার্সেলোনার হয়ে (২০০৬ থেকে ২০২১০)। ফ্রান্সের প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ে (২০২১-২৩) জিতেছেন তিনটি শিরোপা। সবশেষ মায়ামিতে জিতলেন দুটি। আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের জার্সিতে জিতেছেন মোট ছয়টি শিরোপা। 

ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ের রেকর্ডটা মেসিরই। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৪টি শিরোপা জয় করেছেন তারই সাবেক বার্সা সতীর্থ দানি আলভেস। আল আহলির হয়ে ১৭ বছরের ক্যারিয়ার ও জাতীয় দল মিলিয়ে মোট ৩৯টি শিরোপা জিতে তিনে মিসরীয় গ্রেট হোসাম আসুর। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন