বেশির ভাগ ডিলার আত্মগোপনে

বাগেরহাটে ওএমএসের পণ্য নিতে ভোগান্তি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, বাগেরহাট

বাগেরহাট পৌরসভায় ওএমএসের চাল ও আটা কিনতে ভোক্তার লাইন ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

ডিলারের মাধ্যমে বাগেরহাট পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে ওএমএসের চাল আটা বিক্রি করা হয়। সপ্তাহে পাঁচদিন প্রায় ছয় হাজার ভোক্তাকে প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা এবং আটা ২৪ টাকায় দেয়া হয়। তবে আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বেশির ভাগ ডিলার আত্মগোপনে। এরপর কার্যক্রম বন্ধ ছিল ১৭ দিন। খাদ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ২২ আগস্ট পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। আগে প্রতি ওয়ার্ডে বিক্রি হলেও এখন শুধু খাদ্যগুদামের সামনে মিলছে পণ্য। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ক্রেতাকে।

তাদের অভিযোগ, চাহিদানুযায়ী মিলছে না চাল আটা। নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাগেরহাট সদর খাদ্যগুদামের সামনে স্বল্প আয়ের মানুষের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। পণ্য নিতে গেলেই অনেককে নিয়মিত কাজকর্ম বন্ধ রাখতে হচ্ছে। কেউ কেউ নির্ঘুম রাত কাটিয়ে ভোরে এসে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন।

খাদ্য গুদামের সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন প্রায় হাজার ১০০ ক্রেতার মাঝে চাল আটা বিক্রি করতে হয়। সপ্তাহে পাঁচদিন চলে ওএমএসের কার্যক্রম। আগে শুধু নিম্ন আয়ের মানুষ খোলা বাজারের চাল-আটা কিনলেও এখন মধ্যবিত্তরাও তালিকায় যুক্ত হয়েছে। তবে চাল-আটার বরাদ্দ আগের মতোই রয়েছে।

খোলাবাজারে পণ্য নিতে আসা আবুল কালাম বলেন, ‘ভোর ৫টা থেকে দীর্ঘ লাইন। ঘণ্টা অপেক্ষা করে চার কেজি চাল কিনেছি। তাতে ১০০ টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

হাওয়া বেগম নামে নারী বলেন, ‘সকালে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছি। ছোট ছেলেমেয়েদের বাড়ি রেখে এসেছি, সকালের খাবারও তাদের দিতে পারিনি। ১২টা বাজে, এখন কি তাদের রান্না করে ভাত দিতে পারব। যদি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চাল-আটা দিত, তাহলে আমাদের একটু সুবিধা হতো।

খাদ্য বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর মো. আল-আমিন বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম শুরু হয় ফজরের আগ। লোকজন ভোর ৪টার থেকেই এখানে লাইন দিতে থাকে। পণ্য বিক্রির অভিজ্ঞতা আমাদের ছিল না। তার পরও প্রতিদিন হাজার ১০০ লোকের চাল দেয়া হয়। তবে বিক্রি শেষ করতে বিকাল ৫টা বেজে যায়। আবার কাজ শেষ করে অফিসের কাজ করতে হয়। যদি পৌরসভার সব ওয়ার্ডে খোলাবাজারে চাল দেয়া শুরু হয়, তাহলে আমাদেরও এতটা কষ্ট হবে না।

বাগেরহাট খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. শাকিল আহমেদ বলেন, ‘পৌরসভায় সপ্তাহে পাঁচদিন প্রায় ছয় হাজার ভোক্তাকে প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা এবং আটা ২৪ টাকায় দেয়া হচ্ছে। তবে আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ১০ জন ডিলার আত্মগোপনে রয়েছেন। এরপর থেকে ১৭ দিন বন্ধ ছিল খোলাবাজারে চাল বিক্রি। ভোক্তার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২২ আগস্ট খাদ্য বিভাগ খোলাবাজারে চাল বিক্রি শুরু করে। এরপর থেকেই বাড়তে থাকে ভোক্তার সংখ্যা। কারণে কখনো কখনো পাঁচ কেজির পরিবর্তে চার কেজি চাল চার কেজি আটা দেয়া হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন