পূজায় ঢাকা-কক্সবাজার রুটে চলবে সাতটি বিশেষ ট্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে ১৩ অক্টোবর সরকারি ছুটি। শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় কক্সবাজারগামী ট্রেনের চাহিদাও বেড়েছে। বর্ষার শেষ ও শীত আগমনের আগে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে পর্যটকের আনাগোনা এমনিতে বেশি। যাত্রী চাহিদা বিবেচনা করে ১০-১৩ অক্টোবর পর্যন্ত সাতটি বিশেষ ট্রেন যাত্রী পরিবহন করবে। নিয়মিত দুই জোড়া ট্রেনের পাশাপাশি বিশেষ এ সার্ভিস পর্যটন নগরী কক্সবাজারের যাতায়াতসেবা বৃদ্ধি ও রেলের রাজস্ব আয় বাড়াতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা ট্রেন সার্ভিস চালুর পর এ রুটে যাত্রীর সংখ্যা ধারণার চেয়েও বেশি। প্রতিটি ট্রেনই শতভাগ যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। এর আগেও ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার সময় চাহিদা মেটাতে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন সার্ভিস দিয়েছিল রেলওয়ে। অতীতের অভিজ্ঞতা ও যাত্রী চাপের পরিপ্রেক্ষিতে ১০-১৩ অক্টোবর পর্যন্ত সাদটি বিশেষ ট্রেন যাত্রী পরিবহন করবে। বিশেষ এ ট্রেনে ঢাকা থেকে প্রতিদিন ৫১৮ আসন এবং কক্সবাজার থেকে ৬৩৪ আসন থাকবে। এতে রেলওয়ে প্রতি ট্রিপে ৬-৭ লাখ টাকার রাজস্ব আয় করতে পারবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে সব সময় যাত্রী চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে ট্রেন অপারেশন করে। দুর্যোগপূর্ণ পরিবেশে যাতায়াত সংকট, দেশের বিভিন্ন মৌসুমি ফল উৎপাদনের সময় কিংবা কোরবানি ঈদে পশু পরিবহনের জন্যও বিশেষ ট্রেন সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়। টানা ছুটির কারণে যাত্রী চাহিদা বেশি থাকায় ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত টানা চারদিন সাতটি বিশেষ ট্রেন চালচল করবে। ঢাকা থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব বেশি হওয়ায় ট্রেনের নিরাপদ ও আনন্দদায়ক ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছে যাত্রীরা।’

টানা ছুটির কারণে ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা রুটে বিশেষ ট্রেন চালাতে ১ অক্টোবর রেলওয়ে মহাপরিচালককে একটি প্রস্তাব দেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক। গতকাল প্রস্তাবটি মহাপরিচালকের কাছ থেকে অনুমোদন পেয়েছে জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন রেলের উপপরিচালক (টিটি) মো. শওকত জামিল মোহসী। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন শাখা ট্রেনটির শিডিউল ও টাইম টেবিল প্রণয়ন করেছে।

রেলের এ-সংক্রান্ত নথিপত্রে দেখা গেছে, বিশেষ ট্রেনটি ১৮/৩৬ কম্পোজিশনে যাত্রী পরিবহন করবে। ঢাকা থেকে রাতের বেলার ট্রেনটিতে সাতটি এসি বার্থ, একটি প্রথম শ্রেণীর বার্থ, চারটি এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা), দুটি শোভন চেয়ার এবং দুটি গার্ড ব্রেক, পাওয়ার কার ও খাবারের গাড়ির শোভন চেয়ার কোচ থাকবে। এজন্য রাতের ট্রেনটিতে আসন সংখ্যা মাত্র ৫১৮। তবে দিনের বেলা কক্সবাজার থেকে যাত্রী পরিবহনের সময় বার্থ কোচগুলোয় বসে যাতায়াতের সুযোগ থাকায় আসন সংখ্যা বেড়ে হবে ৬৩৪। ট্রেনটি ১০ অক্টোবর রাত ১১টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে পরদিন সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে কক্সবাজারে পৌঁছবে। ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ট্রেনটি কক্সবাজারে যাত্রী পরিবহন করবে। এরপর ১১-১৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন কক্সবাজার থেকে বেলা ১টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে রাত ১০টায় ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছবে।

রেল ভবনের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, টানা ছুটির কারণে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেনের টিকিট চাহিদা অনেক বেশি। যাত্রীরা নিয়মিত ট্রেনের টিকিটের আবদার করায় রেলওয়ে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে মাত্র ৫১৮টি আসনের জন্য এরই মধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে দুই হাজারের মতো টিকিটের চাহিদা দিয়েছে। সাশ্রয়ী ভাড়ার পাশাপাশি নিরাপদ ট্রেনযাত্রার কারণে কক্সবাজার রুটে টিকিটের চাহিদা বেশি থাকায় আগামীতে এ রুটে নতুন ট্রেনের পরিকল্পনাও রয়েছে রেলের।

২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা রুটে আন্তঃনগর ট্রেন কক্সবাজার এক্সপ্রেস যাত্রী পরিবহন শুরু করে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আরো একটি ট্রেন পর্যটক এক্সপ্রেস যাত্রী পরিবহন শুরু করে। দুটি ট্রেনই চট্টগ্রামে যাত্রাবিরতি দেয় এবং চট্টগ্রামের যাত্রীদের জন্য ট্রেনে দুটি কোচ (স্নিগ্ধা ও শোভন চেয়ার) বরাদ্দ রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন