আরো বেড়েছে ডিমের দাম সবজির বাজারেও অস্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা

বাজার নিয়ন্ত্রণে সপ্তাহ দুয়েক আগে ফার্মের মুরগির ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। সে অনুযায়ী প্রতি ডজন ডিম ১৪২ টাকায় বিক্রি করার কথা। অথচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৮০ টাকায়। মাংস, সবজি ও চালের বাজারেও বিরাজ করছে অস্থিরতা। বাজার সিন্ডিকেটের কারণেই এখনো নিত্যপণ্যের দাম নাগালে আসছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দাম নিয়ন্ত্রণে তাই দ্রুত বাজার মনিটরিংসহ কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ তাদের। 

মূল্য নির্ধারণ সরকারের একতরফা প্রক্রিয়া বলে অভিযোগ করেন কারওয়ান বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। তারা জানান, সরকার যখন কোনো ভোগ্যপণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেয় তখন কোনো ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলোচনা করে না। সে কারণেই সরকারের বাজারবিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত সফলতার মুখ দেখেনি। এর আগেও বহুবার ভোগ্যপণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। খুচরা বাজারে অভিযান-জরিমানাও করা হয়েছে। তার পরও সরকারের পক্ষে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সবার আগে পাইকার ও উৎপাদকদের নীতিমালার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সেই সঙ্গে তদারকিও বাড়াতে হবে। 

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর গত ১৫ সেপ্টেম্বর এক আদেশে উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা দাম নির্ধারণ করে দেয়। সে হিসাবে ডিমের হালি খুচরা পর্যায়ে ৪৭ টাকা ৪৮ পয়সায় বিক্রি হওয়ার কথা। অথচ এখন প্রতি হালি কিনতে হচ্ছে ৬০ টাকায়। সে হিসাবে হালিতে ১২ টাকার বেশি গুনতে হচ্ছে গ্রাহককে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির প্রতিবেদনই বলছে, খুচরা বাজারে অনেকটাই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ডিম। 

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সিন্ডিকেট করে ডিমের দাম বাড়াচ্ছে। অন্যদিকে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো তা অস্বীকার করে জানায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা হওয়ায় ডিমের সরবরাহ কমে গেছে। সে কারণেই বেড়েছে ডিমের দাম। 

কারওয়ান বাজারে গতকাল প্রতি হালি ডিম পাইকারি পর্যায়ে ৫৫ ও খুচরায় ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ওই বাজারের ডিম বিক্রেতা আবদুর রশিদ বলেন, ‘‌আমরা পাইকারি পর্যায়ে যে দামে কিনে আনি তার চেয়ে অল্প লাভে বিক্রি করে দিই। সরকার পাইকারি বিক্রেতাদের নিয়ন্ত্রণ করলে আমরাও আরো কম দামে ডিম বিক্রি করতে পারব।’

সরকারের বেঁধে দেয়া দামে মিলছে না মুরগিও। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে ১৬৮ টাকা ৯১, পাইকারিতে ১৭২ টাকা ৬১ ও ভোক্তা পর্যায়ে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা এবং সোনালি মুরগির দাম উৎপাদক পর্যায়ে ২৬০ টাকা ৭৮, পাইকারিতে ২৬৪ টাকা ৫৭ ও ভোক্তা পর্যায়ে ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা নির্ধারিত। অথচ গতকাল কারওয়ান বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২০০-২২০ ও সোনালি মুরগি বিক্রি হয় ২৮০-৩২০ টাকায়। 

এদিকে অস্থিরতা দেখা গেছে সবজির বাজারেও। প্রতি কেজি আলু গতকাল বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। কাঁকরোলের কেজি ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০, পটোল ৫০, শসা ৬০, ঢেঁড়শ ৮০, লম্বা বেগুন ৮০, চিচিঙ্গা ৪০, মুখিকচু ৫০ ও করলা ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। 

প্রতি কেজি আটাশ চাল ৬০ টাকা, মিনিকেট ৭০, জিরা মিনিকেট ৬৫ ও মোটা চাল ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে বাজারে। এছাড়া মসুর ডাল ১১০ টাকা, মুগডাল ১৭০, ছোলা ৮০ ও অ্যাংকর ডালের কেজি বিক্রি হয় ৮০ টাকায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন