মতবিনিময় সভায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল

সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে গতকাল সাইবার নিরাপত্তা আইনবিষয়ক মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয় ছবি: পিআইডি

সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, ‘শুধু সাইবার নিরাপত্তা আইন নয়, পর্যায়ক্রমে সব কালো আইন বাতিল করা হবে। এসব আইনে কাউকে যেন হয়রানি করা না হয়, তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে যাদের নামে মামলা বা যাদের সাজা হয়ে গেছে, তাদের আইনি প্রক্রিয়ায় আবেদন জানাতে হবে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

গতকাল রাজধানীর বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাইবার নিরাপত্তা আইনবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার মনে হয়, অবশ্যই আমাদের সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা উচিত; আমরা সেদিকেই যাব। তবে এ মুহূর্তে পুরোটা বাতিল করব, নাকি বিতর্কিত অংশগুলো বাতিল করে দেব, সেটি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে করা হবে। কিন্তু আলটিমেটলি এটা বাতিল হবে।’

তিনি বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের পর নাগরিকের সাইবার সুরক্ষার জন্য নতুন আইন হবে। সেখানে অবশ্যই আমরা নারী ও শিশুদের স্পর্শকাতরতা বিবেচনায় নিয়ে কাজ করব।’

সভায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা যতভাবেই সংশোধন করি না কেন, মানুষের আস্থা আর বিশ্বাস কিন্তু এ আইনের প্রতি আর আসবে না। ফলে এ আইন বাতিল করে সাইবার সুরক্ষায় যেসব প্রস্তাব আসছে সেগুলো আমলে নিয়ে কাজ করা উচিত।’

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে বা একেবারে ঢেলে সাজালেও এতে জনস্বার্থের কোনো প্রতিফলন ঘটবে না। এ কারণে শুরু থেকেই আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে টিআইবি। এ আইনের মাধ্যমে পুলিশকে অবারিত ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, যেটি ঠিক নয়।’

মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ ইকতেদার আহমেদ, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে ভুক্তভোগীদের পক্ষে খাদিজাতুল কোবরা বক্তব্য রাখেন।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সাইবার আইনে দায়ের হওয়া স্পিচ অফেন্স (মুক্তমত প্রকাশ) সম্পর্কিত মামলাগুলো প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদেরও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মুক্তির ঘোষণা দেয়া হয়।

জানা গেছে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ ও সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩-এর অধীনে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত মোট ৫ হাজার ৮১৮টি মামলা দেশের আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে চলমান রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন