যেভাবে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহার করে গুগল ম্যাপস

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

গুগল ম্যাপস বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেভিগেশন অ্যাপগুলোর একটি। এটি ব্যবহারকারীদের রিয়েল টাইম নির্দেশনা, লোকেশনভিত্তিক সুপারিশ ও ট্রাফিক আপডেট প্রদান করে। তবে অ্যাপটি বিনামূল্যে ব্যবহারের জন্য একটি বাণিজ্যিক চুক্তি রয়েছে, আর তা হলো গুগল তার ম্যাপ ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে। এ তথ্য গুগলকে তাদের সেবা উন্নত করতে, ব্যবহারকারীদের জন্য ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তৈরি করতে ও বিজ্ঞাপন চালাতে সাহায্য করে। এছাড়া অ্যাপটির কার্যক্রম পরিচালনা করতেও কিছু তথ্য নেয়া প্রয়োজন। তবে বেশির ভাগ তথ্য নেয়া ঐচ্ছিক ও গোপনীয়তা সেটিংসের মাধ্যমে কমানো যেতে পারে।

প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট গিজচায়না তাদের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে গুগল ম্যাপস কী ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে এবং সেই তথ্য কীভাবে ব্যবহার করে। 

নেভিগেশন ডাটা

গুগল ম্যাপস ব্যবহারের প্রধান সুবিধাগুলোর একটি হলো এটি রিয়েল টাইম ট্রাফিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আপডেট প্রদান করতে পারে। এ তথ্য ব্যবহারকারীদের নেভিগেশন কার্যকলাপ থেকে সংগ্রহ করা হয়, যা গুগলকে ট্রাফিকের ধরন বিশ্লেষণ করতে ও এলাকাভিত্তিক কোথায় যানজট আছে ও নেই, তা চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। যেমন ভারি ট্রাফিক নির্দেশ করতে ম্যাপে প্রদর্শিত রুটের কিছু অংশে লাল রঙে হাইলাইট করা দেখা যায়, যা এ ডাটার কারণে সম্ভব হয়েছে। 

ট্রাফিক আপডেট উন্নত করতে গুগল বেশকিছু নেভিগেশন ডাটা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে রয়েছে—ব্যবহারকারীর জিপিএস অবস্থান, যে রুটগুলো অনুসরণ করেন, মোবাইল সেন্সর থেকে ডাটা।

অবস্থান সম্পর্কিত ডাটা

রিয়েল টাইম নেভিগেশন বা নিকটবর্তী কোনো স্থান খোঁজার মতো ফিচার ব্যবহারের সময় গুগল ম্যাপকে ব্যবহারকারীর অবস্থানের তথ্য দিতে হয়। তবে গুগল অবস্থান সম্পর্কিত এ ডাটা শুধু নেভিগেশন সহায়তার জন্যই ব্যবহার করে না। এ তথ্য বিজ্ঞাপন ও প্রতারণা প্রতিরোধের জন্যও ব্যবহার করা হয়।

গুগলের অবস্থান সম্পর্কিত ডাটা দুই ধরনের। এটি নেভিগেশন, ট্রাফিক আপডেট ও অ্যাপের কার্যকারিতার জন্য ব্যবহৃত হয়। গুগল এ তথ্য ব্যবহার করে ব্যবহারকারী যেখানে আছেন বা কোথায় গেছেন তার ভিত্তিতে সুপারিশ দেয়। এটি বিজ্ঞাপন ও মার্কেটিংয়ের মতো বৃহত্তর উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়।

অনুসন্ধান ও দিকনির্দেশের ইতিবৃত্ত

গুগল ম্যাপস ব্যবহারকারীর অনুসন্ধান ও দিকনির্দেশনার অনুরোধগুলো রেকর্ড করে। এ তথ্য গুগল অ্যাকাউন্টের ‘ওয়েব ও অ্যাপ কার্যকলাপ’ সেকশনের সঙ্গে যুক্ত থাকে, যা বিভিন্ন গুগল সেবার মধ্যে ব্যবহারকারীর কার্যকলাপ ট্র্যাক করে। তবে ব্যবহারকারী চাইলে তার অনুসন্ধানের ইতিবৃত্তগুলো সেভ করা বন্ধ করতে পারেন। কিন্তু এটি যখন চালু থাকে, তখন কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এগুলো হলো ব্যবহারকারীর নিয়মিত যাতায়াতের গন্তব্য, সেভ করা স্থান, যেমন বাড়ি, কাজ বা পছন্দের রেস্টুরেন্ট, ভ্রমণ রুট ও অনুসন্ধানের ইতিবৃত্ত (সার্চ হিস্ট্রি), গুগল ম্যাপসের মাধ্যমে কোনো পরিষেবা বা প্রতিষ্ঠানকে ফোন করা ও পপ-আপ প্রশ্নের উত্তর। 

কন্টাক্টস, ফটো, ভিডিও ও পর্যালোচনা  

গুগল ম্যাপস ব্যবহারকারীর কন্টাক্টস অ্যাকসেস করতে পারে। তবে এটি অ্যাপটি ব্যবহারের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। গোপনীয়তা বাড়ানোর জন্য গুগল ম্যাপস লগ ইন না করে বা ইনকগনিটো মোডে ব্যবহার করলে এ তথ্য শেয়ার করা হয় না।

এছাড়া গুগল ম্যাপস পর্যালোচনা (রিভিউ), ছবি ও মানচিত্রের পরিবর্তনের জন্য ব্যবহারকারীর তথ্য গ্রহণ করে। যখন কেউ পর্যালোচনা জমা দেন, ছবি আপলোড করেন বা পরিবর্তনের প্রস্তাব করেন, এ তথ্যগুলো গুগলে সংরক্ষণ করা হয়। যদিও এগুলো অন্য ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যাপটি উন্নত করতে সাহায্য করে, তবে মনে রাখতে হবে যে মুছে না ফেলা পর্যন্ত এগুলো পাবলিক ও সবার জন্য দৃশ্যমান।

এছাড়া গুগলের কাছে ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নাম, ই-মেইল, ব্যবহারকারীর আইডি, বাড়ির ঠিকানা বা অন্যান্য সেভ করা ঠিকানা সংরক্ষিত থাকে। এসব তথ্য মূলত অ্যাপের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে এটি বিজ্ঞাপন উদ্দেশ্যের জন্যও ব্যবহৃত হতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন