সংস্কারে বাংলাদেশকে ৩৫০ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন করে তা বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য বাংলাদেশকে সহজ শর্তে ৩৫০ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা এ সহায়তার ঘোষণা দেন। প্রধান উপদেষ্টার এক্স হ্যান্ডলে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় অনুযায়ী বুধবার দুপুরে তাদের মধ্যে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। খবর বাসস।

অধ্যাপক ড. ইউনূসের দীর্ঘদিনের বন্ধু অজয় বাঙ্গা বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের দেয়া ঋণের মধ্যে কমপক্ষে ২০০ কোটি ডলার হবে নতুন ঋণ এবং ১৫০ কোটি ডলার বিদ্যমান কর্মসূচি থেকে পুনর্ব্যবহার করা হবে। ডিজিটালাইজেশন, তারল্য সংকট উত্তরণ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং পরিবহন খাতের সংস্কারে সহায়তার জন্য বিশ্বব্যাংক এ ঋণ দেবে।’

আলোচনার সময় ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের নেয়া ব্যাপকভিত্তিক সংস্কার কর্মসূচির জন্য বিশ্বব্যাংকের সহায়তা চান। তিনি বিশ্বব্যাংকের ঋণ কর্মসূচিতে উদ্ভাবন আনারও আহ্বান জানান। এ সময় ড. ইউনূস বলেন, ‘দেশ পুনর্গঠনের এটি একটি বড় সুযোগ।’

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট দক্ষিণ এশিয়ায় জ্বালানি খাতের সহযোগিতা এবং নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ কীভাবে ভারত, বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভাগ করা যেতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করেন। তাদের আলোচনার সময় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। এ সময় তারা বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে জ্বালানি, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে আলোচনা করেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা যায়। একই সঙ্গে দুই নেতা বাংলাদেশে নেপালি শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির কথাও স্বীকার করেন।

বৈঠকের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস ও কেপি শর্মা ওলির মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি ও বাণিজ্য সহযোগিতা কীভাবে বাড়ানো যায় তারা সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন। নেপালের জলবিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত রয়েছে এবং তারা দুই-তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় জলবিদ্যুৎ রফতানিতে সক্ষম হবে। বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ সম্ভবত নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে।’

নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি দীর্ঘ ও গভীর সম্পর্ক রয়েছে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘দুই প্রতিবেশী দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। অনেক নেপালি শিক্ষার্থী প্রতি বছর বাংলাদেশে পড়াশোনা করতে আসেন। প্রধান উপদেষ্টা নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার থ্রি জিরো আইডিয়া শেয়ার করেছেন।’

অধ্যাপক ইউনূস ইউএসএআইডি প্রশাসক সামান্থা পাওয়ার, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনার ভলকার তুর্ক ও বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সিইও মার্ক সুজমানের সঙ্গে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি সামাজিক ব্যবসা, যুব ও প্রযুক্তিবিষয়ক জাতিসংঘের একটি উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্টে ভাষণ দেন এবং মানবাধিকারবিষয়ক সিএসওর একটি গ্রুপের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এছাড়া ড. ইউনূস দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক একটি আলোচনায় যোগ দেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন