১৯ দিনেও যোগদান করেননি নতুন পরিচালক

রংপুর মেডিকেল কলেজের দাপ্তরিক কাজে স্থবিরতা

এস এম পিয়াল, রংপুর

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

সম্প্রতি রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ফাতেমা বেগম নামে এক প্রসূতি ভুল চিকিৎসায় মারা যান। ঘটনায় জড়িত চিকিৎসকদের বিচার চেয়ে গত ১০ আগস্ট ওই নারীর স্বজনরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ আগস্ট হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনূস আলীসহ আরো কয়েকজন কর্মকর্তা চিকিৎসককে ওএসডি করা হয়। পরে স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে রমেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে ডা. মো. জাফরুল হোসেনকে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯ দিন পার হলেও তিনি যোগদান করেননি। এতে হাসপাতালের দাপ্তরিক কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সহকারী সচিব এমকে হাসান জাহিদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ডা. মো. জাফরুল হোসেনকে রমেক হাসপাতালের পরিচালক পদে বদলির আদেশ দেয়া হয়। আদেশটি ২২ আগস্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। তবে গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ডা. মো. জাফরুল হোসেন  যোগদান করেননি। তিনি যোগদান না করায় দাপ্তরিত কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি বেতন-বিলে স্বাক্ষর করতে না পারায় হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগস্টের বেতনসহ অন্যান্য বিল আটকে রয়েছে।

ব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (অর্থ ভাণ্ডার) ডা. মোহাম্মদ মেজবাহুল হাসান চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ডা. মো. জাফরুল হোসেনকে রমেক হাসপাতালের পরিচালক পদে বদলি করা হয়েছে বলে আমরা চিঠি পেয়েছি ২২ আগস্ট।

কিন্তু তিনি যোগদান করেননি কেন জানতে চাইলে সহকারী পরিচালক বলেন, ‘যতদূর জানতে পেরেছি, তিনি রংপুরে যোগদান করতে চাচ্ছেন না।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এসব অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে রংপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা নিয়োগ। সম্প্রতি হাসপাতালে ফাতেমা বেগম নামে এক প্রসূতির শরীরে ভুল রক্ত দেয়ায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই নারীর স্বজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। ১০ আগস্ট রমেক হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন আন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা . মুহাম্মদ ইউনূস। সময় ফাতেমা বেগমের স্বজনরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা চিকিৎসকদের অপসারণ ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ আগস্ট হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনূস আলী সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. মজিদুল ইসলাম, আইসিইউ প্রধান ডা. জালাল উদ্দিন মিন্টু এবং ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগের প্রধান ডা. জোবাইদা জান্নাতকে ওএসডি  করা হয়। এছাড়া গত বছর অনিয়ম, দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে হাসপাতালের তৎকালীন পরিচালক ডা. শরিফুল হাসানের পদত্যাগ দাবি করে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী সমিতি। আন্দোলনের মুখে স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ওই বছরের ২৩ জানুয়ারি তাকে অন্যত্র বদলি করে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন