মেনিনজাইটিস

শিশুরাও আক্রান্ত হতে পারে

ফিচার ডেস্ক

ছবি: সংগৃহীত

যেকোনো বয়সের মানুষ মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত গতে পারে। তবে বেশি ঝুঁকিতে থাকে ছোট শিশুরা, কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক কম। তবে সঠিক সময়ে এ রোগের চিকিৎসা করানো উচিত। সঠিক সময়ে রোগ শনাক্ত না হলে এবং যথাসময়ে চিকিৎসা না পেলে কিংবা চিকিৎসা অসম্পূর্ণ থাকলে এ রোগে আক্রান্ত শিশুদের নানা রকম স্নায়বিক জটিলতা, খিঁচুনি এবং মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধিতার পাশাপাশি জীবন সংশয়ও হতে পারে। তাই সবারই জানা দরকার রোগটা কী, কীভাবে সন্দেহ করবেন এবং তার চিকিৎসা ও প্রতিরোধই-বা কী।

শিশুরা আক্রান্ত হয় যেভাবে

যেসব জীবাণু মেনিনজাইটিসের জন্য দায়ী, সেগুলোর মধ্যে হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, স্ট্রেপটকক্কাস নিউমোনি আর নিসেরিয়া মেনিনজাইটিডিস ব্যাকটেরিয়া অন্যতম। এ ব্যাকটেরিয়াগুলো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়, শ্বাসতন্ত্র দিয়ে শরীরে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে বংশবিস্তার করে। তারপর সুযোগ বুঝে রক্তে ঢুকে যায় এবং রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে মস্তিষ্কের পর্দায় সংক্রমণ ও প্রদাহ সৃষ্টি করে।

শিশুদের দীর্ঘমেয়াদি কানপাকা ও তার জটিলতা থেকেও মেনিনজাইটিস হতে পারে।

উপসর্গ

•       তীব্র জ্বর, মাথাব্যথা, ক্রমাগত বমি।

শিশু খুব অস্থির থাকে, সারাক্ষণই কাঁদে, কিছুতেই থামানো যায় না। খিটখিটে মেজাজের হয়ে যায়।

ঘরে আলো জ্বললে শিশু চিৎকার শুরু করে, আলোর দিকে তাকাতে পারে না।

অনেক সময় শিশুরা ঝিম মেরে যায়, সাড়া দেয় কম।

খিঁচুনি, অচেতন হয়ে পড়া।

শ্বাসকষ্ট।

অনেক সময় শরীরে লাল র‍্যাশ হতে পারে।

অনেক সময় শিশুর ঘাড় শক্ত হয়ে যায়।

•       ছোট শিশুদের মাথার তালু অনেক সময় ফুলে যায়

করণীয়

মেনিনজাইটিসের লক্ষণগুলোর কোনো একটা দেখা দিলেই শিশুকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে। কর্তব্যরত চিকিৎসকও দেরি না করে, প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ শনাক্ত করার চেষ্টা করবেন এবং দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করে দেবেন। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করবেন। প্রাথমিক অবস্থায় হাসপাতালে এনে চিকিৎসা শুরু করতে পারলে শিশু সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। তবে দেরি হলে রোগের ভয়াবহতা বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরুর পরও মৃত্যুঝুঁকি থেকে যায়। বেঁচে গেলেও অনেকের কানে না শোনা, পক্ষাঘাত, খিঁচুনি ইত্যাদিসহ নানা রকম মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী হতে পারে।

মেনিনজাইটিসের অনেক জীবাণুই হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। তাই সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে বাচ্চাদের দূরে রাখা উচিত, বিশেষ করে হাসপাতালে অসুস্থ কাউকে দেখতে গেলে শিশুদের নেয়া যাবে না। এছাড়া কান, মুখ ও নাকের চারপাশে সংক্রমণ বা কোনো ফোড়া হলে তারও দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। কারণ এসব থেকে মাথায় সংক্রমণ ছড়াতে পারে। প্রতিষেধক টিকার মাধ্যমেও কিছু ক্ষেত্রে মেনিনজাইটিস প্রতিরোধ সম্ভব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন