দুর্জয় তারুণ্যের নির্ভয় বলিদান

জীবন্মৃত নিহতের পরিবার

ফিচার প্রতিবেদক

৪ আগস্ট রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ছোড়া গুলি ছবি: তাওহীদুজ্জামান তপু

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া নিহত ছাত্র-জনতার পরিবারের সদস্যরা শরীরে বেঁচে থাকলেও যেন আর মরমে বেঁচে নেই। কেউ হারিয়েছেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে সন্তানকে, কেউ হারিয়েছেন সদ্য বিবাহিত স্বামীকে, আছে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে রেখে আন্দোলনে গিয়ে আর বাসায় ফিরে না আসার গল্পও। বাবা হতে যাচ্ছেন এ খবর না জেনেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিতে হয়েছে কাউকে। পড়াশোনা শেষে পরিবারের হাল ধরার আশায় দিন পার করা মা-বাবার দিন-রাত যেন একাকার হয়ে গেছে বুলেটের আঘাতে। আন্দোলনে নিহত ব্যক্তির সঙ্গে সঙ্গে যেন একটি পরিবারও হারিয়েছে পথ দেখার আলো। নতুন যে পথের যাত্রা শুরু হয়েছে তা যেন এক অনন্ত যাত্রা। 

১৬ জুলাই দুপুরে পুলিশের ছোড়া উপর্যুপরি ছররা গুলিতে নিহত হন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। পুলিশের গুলি ছোড়া এবং আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন তোলে সেই সময়। আবু সাঈদ হয়ে ওঠেন সাহসিকতা ও বিপ্লবের প্রতীক। আবু সাঈদের গল্প আমাদের সবার চোখের সামনে দৃশ্যমান থাকলেও এমন শত শত মৃত্যুর গল্প থেকে গেছে অন্তরালে, অগোচরে। তাদের পরিবার আর স্বজনদের না বলা কথা, আর্তনাদ আর আর্তচিৎকার যেন থেকে গেছে পর্দার আড়ালে। নিহত পরিবারের স্বজনরা জানিয়েছেন তাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা আর বর্বরতার শিকার হওয়া সন্তানদের এক করুণ চিত্র। 

স্বৈরাচার পতনের মধ্য দিয়ে আন্দোলনের সফলতা এলেও নিহত এসব পরিবারের সংসারের হাল কে ধরবে তা নিয়ে শঙ্কায় দিন পার করছেন সবাই। দেশের জন্য জীবন দিয়ে নতুন বাংলাদেশের যে স্বপ্নের বীজ বুনে গেছেন শহীদরা, সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন চায় পরিবারগুলো। পাশাপাশি তাদের এ অসহায়ত্বের জীবনে ভরসার জায়গাও চান তারা। কেউ যেন আশার আলো হয়ে পরিবারের জন্য এগিয়ে আসেন এমনটাই প্রত্যাশা নিহতের স্বজনদের।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন