বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

'পুলিশ দুই হাত তুলে পেছনে যেতে বলে আকস্মিক গুলি চালায়'

শফিকুল ইসলাম

ছবি- বণিক বার্তা

৫ আগস্ট সোমবার। কারফিউ প্রত্যাখ্যান করে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এদিন কারফিউ ভাঙার জন্য সকালে বাসা থেকে বের হন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ইউসুফ সালেহীন।

কারফিউ ভাঙতে গিয়ে পুলিশের হামলায় শরীরে ১১টা ছররা গুলি লাগে তার। চোখের মধ্যে লাগা একটি গুলি ছিল সবচেয়ে ভয়ানক। গালে, হাতে, পেটেও ছিল গুলি। অপারেশন করে চোখ থেকে গুলি বের করা হলেও মুখ ও শরীরের বাকি তিনটি গুলি এখনো বের করা সম্ভব হয়নি।

ইউসুফ সালেহীন জানান, এদিন সকাল ১১টায় বের হয়ে দেখেন রামপুরা ব্রিজ ও ভার্সিটির চারদিকে পুলিশ ঘেরাও করে আছে। ভার্সিটি এলাকায় কাউকে দেখলেই সকাল থেকে ফাঁকা গুলি ছুড়ছিল। সাঁজোয়া যান নিয়ে অবস্থান নিয়েছিল তারা। ভার্সিটির দিকে এগোতে গেলেই পুলিশ লাগাতার গুলি করতে থাকে এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে পুলিশ দুই হাত তুলে ছাত্রদের পেছনে যেতে বলে। শিক্ষার্থীরা সে অনুসারে হাত তুলে পেছনে যেতেও থাকে। এরই মধ্যে অনেক দূর থেকেই পুলিশ আকস্মিকভাবে শিক্ষার্থীদের দিকে গুলি চালায়।

ইউসুফ সালেহীন বলেন, আমার শরীরে ১১টা ছররা গুলি লাগে। একটা গুলি চোখের মধ্যে, একটা গালে, বাম হাতে চারটা, একটা ডান হাতে এবং পেটে ও বুকে আরো চারটা গুলি লেগেছে। তাৎক্ষণিক কিছু গুলি বের করলেও চোখ, মুখ ও শরীরে আরো চারটি রয়ে যায়। ওইদিন রাতে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞানে গেলে তারা পরদিন বিভিন্ন টেস্ট করে অপারেশনের কথা জানায়। হাসপাতালে আরো এমন অসংখ্য রোগীদের সঙ্গে দেখা হয়েছে, যারা গুলি খেয়ে চোখ হারিয়েছে। পরে ১১ আগস্ট বাংলাদেশ আই হাসপাতালে অপারেশন করে চোখ থেকে গুলি বের করা হয়েছে এবং শারীরিক অসুস্থতার কারণে কিছুদিন পর মুখ ও শরীরের বাকি তিনটা গুলি বের করবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন