![](https://bonikbarta.net/uploads/news_image/news_389778_1.jpg?t=1720047080)
অন্য যেকোনো অবকাঠামোর তুলনায় বিদ্যুৎ খাতে নগদ অর্থ আয়ের সুযোগ বেশি। যথাযথ এ সুযোগ ব্যবহার করার মাধ্যমে সরকার আর্থিক সচ্ছলতার পথ তৈরি করতে পারে। কিন্তু এ খাতে বাস্তবায়নযোগ্য নীতি কাঠামোর অভাবে বিশেষ ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে। ফলে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী হচ্ছে। বিশেষ কিছু গোষ্ঠীর পছন্দের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রাধান্য দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। জনগণের স্বার্থ বিবেচনা করা হয়নি। ফলে বিদ্যুৎ খাতে সরকারের ক্ষতি এবং জনগণের ভোগান্তি দূর হচ্ছে না।
গতকাল সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) আয়োজিত ‘অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে কার্যকর নীতি প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা। আলোচক ছিলেন ব্রাইট গ্রিন এনার্জি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান দিপাল সি বড়ুয়া, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) ডেপুটি সেক্রেটারি ব্যারিস্টার মো. খলিলুর রহমান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. সাকিব বিন আমিন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সানেমের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ১৯৯৬ সাল থেকে ২৩টি মাস্টারপ্ল্যান ও পলিসি গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয়। ২০১০ সালে তিনটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়, যার মধ্যে দুটি ছিল গ্যাস খাত নিয়ে। এই মাস্টারপ্ল্যান ও পলিসি গাইডলাইনের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য দেখা যায় না। এসব নীতি প্রণয়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো সাধারণ মানুষের মতামত, বাজার যাচাই, বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজের মতামত এবং এ খাতের বিশেষজ্ঞদের মতামত যথাযথ প্রক্রিয়ায় গ্রহণ করেনি। ফলে এসব নীতিতে নানা অসংগতি রয়েছে এবং বিশেষ গোষ্ঠীগুলোর স্বার্থ প্রাধান্য পেয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নীতি প্রণয়নে রাষ্ট্রের পদ্ধতিগুলো পুনরায় বিবেচনা করা এবং পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি খাতের নীতিমালা এবং মাস্টারপ্ল্যানগুলো পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নেয়া জরুরি। ১৯৯৬ সাল থেকে যে গ্যাপ তৈরি হয়েছে সেটি চিহ্নিত করে সমস্যার সমাধান করা, নীতি প্রণয়নে অংশীজনদের যথাযথ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অংশগ্রহণমূলকভাবে একটি নীতি কাঠামো তৈরি করা জরুরি। যার মাধ্যমে সরকার ও জনগণ উপকৃত হবে। এ খাতে বিশেষ কোনো গোষ্ঠী যেন অনৈতিক সুবিধা না পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে পরিবেশবান্ধব সোলার এনার্জির দিকে নজর দিতে হবে। এর ব্যবহার সম্পর্কে মানুষকে আগ্রহী করে তুলতে হবে। এজন্য নীতিসহায়তা ও এর রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে দক্ষ করে তুলতে হবে। তাহলে জটিলতা থাকবে না, মানুষের আগ্রহ বাড়বে।’
ব্রাইট গ্রিন এনার্জি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান দিপাল সি বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা যদি সরকারের বিভিন্ন পলিসির দিকে তাকাই, তাহলে যা দেখতে পাই তার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে অনেক বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। এর ফল হিসেবে আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ অর্জন করতে পেরেছি। এটি একটি সফলতা কিন্তু সফলতা মাঝে মাঝে দায়ভারের একটা জায়গা তৈরি করে।’