তীব্র গ্যাস সংকটে ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা (ফাইল ছবি)

রাজধানী ঢাকায় গ্যাস সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টা মিলছে পাইপলাইনের গ্যাস। সাধারণত মাঝ রাতে গ্যাস এসে আবার ভোর না হতেই চলে যায়। কিছু কিছু এলাকায় দিনের বেলায় গ্যাস মিললেও নিভু নিভু করে জ্বলে চুলা। আবার বিনা ঘোষণায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ার ঘটনাও নিয়মিত হচ্ছে।

গ্যাস সংকটের এমন চিত্র পাওয়া গেছে রাজধানীর কদমতলী, কামরাঙ্গীরচর, কুড়িল বিশ্বরোড, নদ্দা, বেইলি রোড, মগবাজার ওয়্যারলেস গেট, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়াসহ বিভিন্ন এলাকায়। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ এলাকার বাসিন্দারা।

গ্রাহকরা জানিয়েছেন, পাইপলাইনের গ্যাস রাত ১১টার পর আসে আবার ভোরবেলাতেই চলে যায়। দিনের বেলা কোথাও কোথাও গ্যাস আসলেও চাপ একেবারেই কম। বাধ্য হয়ে অনেকে সিলিন্ডার ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছেন। কেউ কেউ রাতেই রান্না করছেন কিংবা হোটেল থেকে খাবার কিনে খাচ্ছেন। আবার বৈদ্যুতিক চুলায় মাঝেমধ্যে খিচুড়ি রান্না করে খাচ্ছেন কিছু পরিবার। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বাচ্চাদের খাবার তৈরি করা নিয়ে।

মিরপুরের বাসিন্দা জাহানারা আক্তার বণিক বার্তাকে বলেন, রাত ১২টায় এসে ভোর ৭টায় চলে যায় গ্যাস। দিনের বেলা গ্যাস পাওয়ার আশা যেন আকাশ কুসুম কল্পনা। ফলে যে সময়টায় ঘুমাতে যাওয়ার কথা সে সময়টাতে রান্নাই করা যাচ্ছে না। এদিকে রাতের ঘুমে অনিয়ম হওয়ায় শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

কামরাঙ্গী চরের বাসিন্দা সবুজ মিয়া জানান, আমাদের এখানে রাত ১১টায় গ্যাস আসে,  ভোর ৫ টার আগেই চলে যায়। এলাকায় গ্যাস সংকট তীব্র ও দীর্ঘদিনের সমস্যা। এর কোনো সমাধান বা পরিবর্তন হচ্ছে না। খাদ্য তো মৌলিক চাহিদা। এতে তো আর ছাড় দিলে চলে না।

কাঁঠালবাগানের বাসিন্দা শাকেরা তাসনীম ইরা বলেন, গ্যাস না থাকা এখন নিত্য ঘটনা। বাসায় ছোট বাচ্চাদের খাওয়া নিয়ে খুব ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া আত্মীয়-স্বজনরা বেড়াতে আসলে হোটেল থেকে খাবার কিনে আনতে হয়। 

চলতি মাসেই গ্যাসের এই সংকট নিরসনের আশ্বাস দিয়েছেন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী মো. সেলিম মিয়া। তিনি বলেন, সব এলাকায় নয়, কিছু কিছু এলাকায় গ্যাসের সংকট রয়েছে। সরবরাহ কম থাকায় এমনটা হচ্ছে। আশা করছি, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে সমস্যার সমাধান হবে।

এদিকে পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে সরবারহ হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। ফলে প্রতিদিন ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন