আওয়ামী লীগ সবসময় অগণতান্ত্রিক ও অপশক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের সব অর্জন আওয়ামী লীগের হাত দিয়েই অর্জিত হয়েছে। ৭৫ বছরের কণ্টকাকীর্ণ পথ চলায় আওয়ামী লীগ সবসময় অগণতান্ত্রিক ও অপশক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের চক্ষুশূল হয়েছে।

শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে ‘গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৫ বছর উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ এ সেমিনারের আয়োজন করে।

চট্টগ্রাম-৭ আসনের সংসদ সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খাঁন মার্শাল ল জারির পর বঙ্গবন্ধুসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মী জীবন দিয়েছে। স্বাধীনতার পরও জিয়াউর রহমান ও এরশাদ দুই সামরিক স্বৈরশাসকই আওয়ামী লীগের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে।

২০০৭ সালেও ভিন্ন খোলসে প্রকৃতপক্ষে সামরিক শাসন চলেছে বলে উল্লেখ করেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ২০০৭ সালে সমাজে বুদ্ধিজীবী পরিচয় দেয়া কিছু ব্যক্তিকে ভাড়া করে সামনে দিয়ে প্রকৃতপক্ষে সামরিক শাসনই চালু করা হয়েছিল। সেই সময় দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ বিএনপির দুর্নীতি আর দুঃশাসনের অভিযোগ তুলে যে শাসক এসেছিল, তারা তো প্রথমেই বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করার কথা। কিন্তু তারা সেটি না করে প্রথমে শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করেছে। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা সবসময় অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী শক্তির চক্ষুশূল ছিল।

এ সময় বিএনপির সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, আর কিছু নবায়ন করা হয়েছে, কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। আর সব সমঝোতা স্মারক দেশের স্বার্থেই করা হয়েছে। অথচ বিএনপি নেতারা গলা ফাটিয়ে বলে যাচ্ছেন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। মির্জা ফখরুল সাহেব নাকি ঢাকা কলেজে পড়াতেন, বিএনপির আরো কিছু নেতাসহ ড. মঈন খানও শিক্ষিত। চুক্তি আর সমঝোতা স্মারকের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে না পারা বিএনপির শিক্ষিত নেতারা কেন অশিক্ষিতের মতো কথা বলছেন সেটি আমার বোধগম্য নয়।

ড. হাছান বলেন, আসলে যাদের নেত্রী বলেছিলেন সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে বাংলাদেশ যুক্ত হলে দেশের সব ‘সিক্রেসি আউট’ হয়ে যাবে, তারা কানেক্টিভিটির মর্ম বোঝার কথা নয়। যেমন নেত্রী তেমন তার সভাসদ, সেজন্যই তারা এসব আবোল-তাবোল কথা বলছেন, আর বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। কোনো কোনো পীর সাহেবও দেখছি লাফাচ্ছেন। অথচ গাজায় যেভাবে মানুষ হত্যা করা হয়েছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে, প্রায় ৩৮ হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মিছিল নিয়ে লাফাতে দেখি না। বিএনপি আর জামাতও এ নিয়ে একটি শব্দ বলেনি। 

তিনি বলেন, আমরা ভারতের বুকের ওপর দিয়ে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি স্বাক্ষর করেছি, ভুটানের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা চলছে। অঞ্চলের মানুষের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির স্বার্থেই সে কানেক্টিভিটি আমরা আরো বাড়াতে চাই, নেপাল ও ভুটানকেও যুক্ত করতে চাই। কিন্তু বিএনপি সেটি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. মঈনুদ্দীন, আবুল কালাম আজাদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ পালিত এবং জেলা মহিলা ও যুব আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন