মতিউর ও তার পরিবারের বিও হিসাব অবরুদ্ধ করতে বিএসইসির নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আলোচিত কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট বা বিও হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গতকাল সংস্থাটির পক্ষ থেকে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে (সিডিবিএল) এসব বিও হিসাব অবরুদ্ধ করতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্যানুসারে, যাদের বিও হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন এনবিআর কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ, প্রথম স্ত্রীর মেয়ে ফারজানা রহমান ঈপ্সিতা ও ছেলে আহাম্মেদ তৌফিকুর রহমান, দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলী, দ্বিতীয় স্ত্রীর মেয়ে ইফতিমা রহমান মাধুরী, দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মুশফিকুর রহমান ইফাত ও ইরফানুর রহমান ইরফান। এর আগে সম্প্রতি এদের ব্যাংক হিসাব ও বিও হিসাব স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি শেয়ারবাজারের মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ও ব্যাংকগুলোয় পাঠিয়েছে আর্থিক খাতের গোয়েন্দা সংস্থাটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিও হিসাব অবরুদ্ধ করার জন্য অনুরোধ করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসির পক্ষ থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এসব বিও হিসাব অবরুদ্ধ রাখতে সিডিবিএলকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যানুসারে, মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে ২০টি কোম্পানিতে নিজের নামে ছাড়াও তার স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, বোনসহ কয়েকজন নিকটাত্মীয় ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোম্পানির নামে ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্লেসমেন্ট শেয়ার নেয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। অভিহিত মূল্যে এসব শেয়ারের দাম ৫০ কোটি টাকারও বেশি।

মতিউর রহমানের ছেলে ইফাত মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল এবং ঢাকার বিভিন্ন খামার থেকে ৭০ লাখ টাকার গরু কিনেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে উঠে আসে। এর পর থেকে মতিউর রহমানের ছেলের দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপন; মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো বাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

একাদশ বিসিএসের (শুল্ক ও আবগারি) কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি তাকে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকে সরকার মনোনীত পরিচালক পদ থেকেও অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মতিউর রহমানের দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য অনুসন্ধানে এরই মধ্যে তিন সদস্যের টিম গঠন করেছে দুদক। সংস্থাটির উপপরিচালক আনোয়ার হোসেনকে প্রধান করে এ দল গঠন করা হয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন