মূলধনি মুনাফার ওপর স্ল্যাবভিত্তিক করারোপের প্রস্তাব বিএমবিএর

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুসারে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের ৫০ লাখ টাকার বেশি মূলধনি মুনাফার ওপর ১৫ শতাংশ হারে করারোপ হবে। এটি পুনর্বিবেচনা করে স্ল্যাবভিত্তিক কর ধার্যের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)। গতকাল বিএমবিএর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনায় এ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। 

সংগঠনটি মনে করে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর লক্ষ্যে যে অর্থায়ন প্রয়োজন, তা সংগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে পুঁজিবাজার।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাজেট ঘাটতি পূরণে অধিকাংশ ব্যাংকিং উৎস থেকে ধারস্বরূপ সংগ্রহ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া অ-ব্যাংকিং উৎস থেকে ধার করার মাধ্যমেও বাজেট ঘাটতি পূরণের একটি পদক্ষেপ নেয়া হবে। এক্ষেত্রে অর্থ সংস্থানের দীর্ঘমেয়াদি উৎস হিসেবে পুঁজিবাজার থেকে অর্থায়নের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। পুঁজিবাজারের প্রাইমারি মার্কেটের মাধ্যমে বিভিন্ন বন্ড/সুকুক/ডিবেঞ্চার ইত্যাদি ইস্যুর মাধ্যমে বাজেটে অর্থায়নের উদ্যোগে নেয়া যেতে পারে।

বাজেটের ঘাটতি অর্থায়ন পুঁজিবাজারের মাধ্যমে করতে হলে এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে মার্চেন্ট ব্যাংক। অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো স্টক, বন্ড ও অন্যান্য সিকিউরিটিজের মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থায়ন ও পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্তির কাজ করে। এসব কাজের আওতা বাড়লে কর আয় অনেক বাড়বে। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে তাদের পরিচালন আয়ের ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ কর দিতে হয়, যেখানে সংশ্লিষ্ট অন্যদের কর দিতে হয় ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এমতাবস্থায় মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর জন্য প্রযোজ্য করের হার ২৭ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে আসা প্রয়োজন। এটি কমলে পুঁজিবাজারে অর্থায়নে মার্চেন্ট ব্যাংক বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে।

পুঁজিবাজারের মূল ভিত্তি হচ্ছে প্রাইমারি মার্কেট। বিভিন্ন উদ্যোক্তা, এসএমই কোম্পানি, স্টার্টআপ কোম্পানি এবং অন্যান্য অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ ও বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে প্রাইমারি মার্কেটকে প্রাধান্য দেয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন কার্যকর পলিসি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে।

জাতীয় বাজেটে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে করহারের ব্যবধান বৃদ্ধি করা হলে কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আকৃষ্ট হবে। এছাড়া অ-তালিকাভুক্ত বা নতুন নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তালিকাভুক্ত করার জন্য নির্দেশনা দেয়া যেতে পারে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে পলিসি সহায়তার পাশাপাশি তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করপোরেট ট্যাক্সের হার ১৫ শতাংশ ও ভ্যাট ছাড় দেয়া যেতে পারে। 

দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য কর প্রণোদনা, সহজীকৃত বিনিয়োগ পদ্ধতি এবং পলিসি সহায়তার মতো পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

পুঁজিবাজারের উন্নয়নকল্পে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন কার্যকর পলিসি সহায়তা এবং সরকারি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইসিবিকে প্রাইমারি মার্কেটসংক্রান্ত কার্যক্রম পুনরায় শুরুকরণসহ বিভিন্ন কার্যকর পলিসি সহায়তা দেয়া যেতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন