ঈদের ছুটিতে ভারত ভ্রমণ

ইমিগ্রেশনে ভোগান্তির অভিযোগ যাত্রীদের

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, যশোর

ছবি : সংগৃহীত

প্রতিবেশী দেশ ভারতে ঈদের ছুটি কাটিয়েছেন অনেকে। ছুটি শেষে দেশে ফিরতে শুরু করেছেন এসব বাংলাদেশী। কারণে যশোরের বেনাপোল চেকপোস্টে যাত্রীদের চাপ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেকটা বেড়েছে। তবে দুই দেশের ইমিগ্রেশনে ভোগান্তির অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা। চেকপোস্টে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে হতাশা আর অসন্তোষ রয়েছে। বেনাপোলে দুই পাশের ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করতে - ঘণ্টা সময় লেগে যায়। নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন যাত্রীরা। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, সেবার মান বাড়াতে তারা কাজ করছে। হয়রানি এড়াতে যাত্রীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, ১২-১৬ জুন পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৪৮০ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করেছে। এর মধ্যে ভারতে প্রবেশ করেছে ২০ হাজার ১৩৭ জন। আর ভারত থেকে ফিরেছে ১০ হাজার ৩৪৩ জন। গতকাল বেনাপোল দিয়ে দেশে ফিরেছে প্রায় আট হাজার যাত্রী। প্রতি বছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ পাসপোর্টধারী যাতায়াত করে। ভ্রমণ কর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের বছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ভিসা ফি বাবদ ভারত সরকারের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা আয় হয়।

তবে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বছরে অর্থের পরিমাণ দুই দেশে বাড়লেও সেবার মান তলানিতে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। তারা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এখন ভোর ৪টার মধ্যে বন্দরে ভিড়ছে দূরপাল্লার সব যাত্রীবাহী বাস। যাত্রীরা দ্রুত পৌঁছলেও বন্দর সকাল সাড়ে ৬টায় খোলায় তাদের দীর্ঘ সময় সড়কের ওপর লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অন্যদিকে ভারত অংশে জনবল সংকটের কারণে ইমিগ্রেশনে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে বারবার বিএসএফের তল্লাশির কারণে দেরি হচ্ছে।

বেনাপোল নোম্যান্স ল্যান্ডে রানা হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, ‘এবার পরিবার নিয়ে ভারতে ঈদের ছুটিতে ঘুরতে গিয়েছিলাম। গতকাল দেশে ফিরেছি। পেট্রাপোল চেকপোস্টে ধীরগতিতে কাজ করায় আমাদের অনেক সময় ব্যয় হয়।

গোলাম মোস্তফা সুজন নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘যাওয়ার দিন বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম শেষ করতে মাত্র কয়েক মিনিট লাগলেও পেট্রাপোল নো ম্যানসল্যান্ডে ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম। ফিরতে গিয়েও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

আরতি বালা সাহা বলেন, ‘ভারত ভ্রমণে বাংলাদেশ সরকার নিচ্ছে হাজার ৫৫ টাকা ভ্রমণ কর ভিসা ফি বাবদ ভারতীয় দূতাবাসগুলো নিচ্ছে ৮৫০ টাকা। ভিসার চেয়ে ভ্রমণ কর বাড়লেও সেবার মান বাড়েনি যাতায়াতে। বন্দরের কার্যক্রম ভোর ৫টার মধ্যে শুরু হলে দুর্ভোগ অনেকটা কমত।

ব্যাপারে বেনাপোল স্থলবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ইনচার্জ বাদল চন্দ্র রায় বলেন, ‘ঈদ শেষে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। ভোগান্তি কমাতে সুযোগসন্ধানীদের কাছে পাসপোর্ট না দিতে যাত্রীদের বলা হয়েছে।

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদুল আজহার ছুটিতে পাঁচদিনে ৩৮ হাজার ৪৮০ জন দুই দেশের মধ্যে আসা-যাওয়া করেছে। স্বাভাবিক সময়ে সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন সাড়ে চার হাজারের মধ্যে থাকে। তবে এবার রেকর্ড সংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করেছে। যাদের অধিকাংশই ঈদ উপলক্ষে দীর্ঘ ছুটির কারণে ভ্রমণ চিকিৎসার জন্য ভারতে গেছে। গতকাল থেকে যাত্রীরা আবার ফিরতে শুরু করেছে। পেট্রাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে তাদের তাগিদ দেয়া হচ্ছে। সেখান থেকে জানানো হয়েছে, ইমিগ্রেশনে দেরি হচ্ছে না। দেরি হওয়ার মূল কারণ বিএসএফের তল্লাশি।

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) রেজাউল করিম জানান, যাত্রীসেবার মান বাড়াতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষকেও সেবা বাড়াতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন