ভ্লাদিমির পুতিনের দাবি রাশিয়ার বৈদেশিক বাণিজ্যের ৪০ শতাংশ হচ্ছে রুবলে

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার মুদ্রা বিশ্ববাজারে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি জানান, রুবলের মাধ্যমে রাশিয়ার মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় ৪০ শতাংশ পরিচালিত হচ্ছে। ডলার, ইউরো ও অন্যান্য ‘বন্ধু নয়’ এমন পশ্চিমা মুদ্রায় লেনদেন কমে যাওয়ায় রুবলের কদর বেড়েছে। খবর সিএনবিসি।

গত সপ্তাহের শেষ দিকে সেন্ট পিটার্সবার্গে ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামে (এসপিআইইএফ) অংশ নেন ভ্লাদিমির পুতিন। সেখানে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলো এখন আমাদের বিশেষ মনোযোগের দাবিদার। কারণ তারাই বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। এরই মধ্যে আমাদের তিন-চতুর্থাংশ বাণিজ্যের অংশীদারে পরিণত হয়েছে তারা।’

ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো উদীয়মান বাজারগুলোর কথা উল্লেখ করে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ব্রিকস জোটের দেশগুলোর স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেন বাড়ানোর চেষ্টা করবে মস্কো।’ বন্ধু নয় এমন দেশগুলোর মুদ্রায় রুশ রফতানি গত বছরের তুলনায় অর্ধেক হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘আমদানি ও রফতানি কার্যক্রমে রুবলের শেয়ার বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা বর্তমানে প্রায় ৪০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।’ 

বিভিন্ন প্রতিবেদন বলছে, রুশ আমদানি-রফতানিতে রুবলে লেনদেনের পরিমাণ এক বছর আগের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি এবং যুদ্ধের আগের বছরের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেড়েছে।

রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বাজারকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনার কথাও জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট। তার পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে—চলতি দশকের শেষ নাগাদ রাশিয়ার পুঁজিবাজারের আকার দ্বিগুণ করা, আমদানি কমানো ও স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগ বাড়ানো।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে মস্কো। এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও এর পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিকে ছেঁটে ফেলার চেষ্টা করে। তবে বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস, কয়েক দফা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও চলতি বছর রাশিয়ার অর্থনীতি অন্যান্য উন্নত অর্থনীতির তুলনায় দ্রুত বাড়বে।

গত এপ্রিলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকে জানিয়েছে, ২০২৪ সালে রাশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। একই সময়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া অন্যান্য বড় অর্থনীতির মধ্যে জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের প্রবৃদ্ধি থাকবে ১ শতাংশেরও কম।

রাশিয়ার দাবি, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মস্কোর গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোকে আরো বেশি স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে। দেশে নাগরিকদের ব্যক্তিগত ব্যয় ও অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ স্থিতিশীল রয়েছে। পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা ও জ্বালানি তেলের উচ্চ মূল্য মস্কোর শক্তিশালী রফতানি আয় ধরে রাখতে সহযোগিতা করেছে। কারণ ভারত ও চীনের মতো দেশে তেল ও পণ্য রফতানি অব্যাহত রয়েছে রাশিয়ার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন