কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর হয়ে উঠছে যুক্তরাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: ফোর্বস

যুক্তরাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) যুক্তির ব্যবহার ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা  ক্রমশ এআইনির্ভর হয়ে উঠছে। খবর বিবিসি।

যুক্তরাজ্যের কিছু বিদ্যালয় ওয়ার্কশিট ফরম্যাটিংয়ের কাজে সাহায্য করার জন্য এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। এর পাশাপাশি শিক্ষক ও কর্মীদের সহায়তা এবং শিশুদের সাহায্যের লক্ষ্যে এআই-নির্ভর প্রধান শিক্ষকের ব্যবহারও শুরু হয়েছে। 

ওয়েস্ট সাসেক্সের একটি বোর্ডিং স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে একজন এআই শিক্ষকও কাজ করছেন। আরেকটি স্কুল এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের পছন্দের শিক্ষক নির্বাচনের অনুমতিও দিয়েছে।

কটেসমোর স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিস্টার রজারসন বলেন, ‘‌সবার মতামত নেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে।’

পাঠ্যক্রমের বাইরে কোনো বিষয়ে জিজ্ঞাসার জন্য এআই শিক্ষকের ব্যবহার চালু করা হয়েছে বলেও স্কুল সূত্রে জানা গেছে। কেননা অনেক সময় স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগের সুযোগ থাকে না।

পিজ পটেজ স্কুলে ৮ থেকে ১৩ বছর বয়সীদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। এখানে মাই ফিউচার স্কুল নামের একটি প্রকল্পও চালু করা হয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীরা এআই ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী স্কুলের ডিজাইন করতে পারে। এছাড়া যুক্তরাজ্যের অন্যান্য স্কুলে এআইকে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব সারের ডিজিটাল লার্নিং বিভাগের প্রধান ড. ক্রিস ট্রেস বলেন, ‘‌এআই প্রতিনিয়ত আরো উন্নত ও দ্রুতগতির হয়ে উঠছে। এটি দীর্ঘ সময় আমাদের মধ্যে অবস্থান করবে।’

তিনি বলেন, ‘‌এআইয়ের কারণে আপনার চাকরি না গেলেও যার এ বিষয়ে ধারণা রয়েছে সে জায়গা দখলে নেবে।’

ড. ক্রিস ট্রেসের দাবি, ভবিষ্যতে একজন শিক্ষার্থীর অগ্রগতির বিষয়ে সার্বিক তথ্য এআইয়ের মাধ্যমে পাওয়া যাবে। এছাড়া কোন বিষয়ে তার সমস্যা হচ্ছে এবং কোন বিষয়ে সহায়তা প্রয়োজন সেটিও জানা যাবে। তিনি বলেন, ‘‌আমি মনে করি শিক্ষা ও প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল।’

অন্যদিকে রজারসন জানান, শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলার পাশাপাশি মানুষকে আরো স্বতন্ত্রভাবে কোনো কিছু শেখাতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে মানব শিক্ষকের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে বলেও জানান তিনি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের এআইয়ের সীমাবদ্ধতার বিষয়ে জানাতে হবে। এছাড়া পুরো শিক্ষা খাতকে এআইয়ের ব্যবহারের বিষয়ে খুবই সতর্ক থাকতে হবে।

এআইয়ের অপব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক করে ফোকস্টোনের টার্নার স্কুলের ডিজিটাল প্রভিশন লিডার সেরিস ওয়াকার বলেন, ‘‌শিক্ষকরা ডিটেক্টর ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু এআই এমন ফল তৈরিতে সক্ষম যেটি দেখে নকল মনে করার কোনো সুযোগ নেই। আর এটি শিক্ষা ব্যবস্থায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘‌সব শিক্ষার্থী সমানভাবে প্রযুক্তির সংস্পর্শে থাকে না। তাই এ প্রযুক্তির ব্যবহার তাদের জন্য নেতিবাচক পরিস্থিতিও তৈরি করতে পারে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন