ভিটামিন ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলতে রংপুর ও নীলফামারীতে পরিকল্পিত সবজি চাষ করা হচ্ছে। জয়েন্ট অ্যাকশন ফর নিউট্রিশন আউটকাম (জানো) প্রকল্পের মাধ্যমে দুটি জেলায় ৭৩৫টি উচ্চ পুষ্টিসমৃদ্ধ বাগানও তৈরি করা হয়েছে।
করে দেয়া হয়েছে। এসব বাগানে লালশাক, টমেটো, পালংশাক, মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে, গিমা কলমি, ঢেঁড়স, পুঁইশাক, বরবটি, সজিনা ও কাঁচা কলা আবাদ করা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, এসব সবজি দিয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার তৈরির জন্য রন্ধন প্রদর্শনীও করা হচ্ছে। এতে গর্ভবতী ও প্রসূতি, শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী সদর, জলঢাকা, ডোমার ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার ৪৪টি ইউনিয়নে এবং রংপুরের তারাগঞ্জ, গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়ার ২০টি ইউনিয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এটি একটি নিউট্রিশন সুশাসন প্রজেক্ট। এর কার্যক্রম সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয়ে সম্পাদিত হচ্ছে। প্লান ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় কেয়ার বাংলাদেশের নেতৃত্বে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ইএসডিও। প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সহঅর্থায়নে রয়েছে অস্ট্রিয়ান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন।
প্রকল্পের টেকনিক্যাল অফিসার (নিউট্রিশন সেনসেটিভ এগ্রিকালচার) নীহার কুমার প্রামাণিক বলেন, ‘মানুষের মধ্যে পুষ্টিকর খাদ্যাভাস গড়ে তোলা প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। প্রকল্প শুরুর আগে সবজির ভেলুচেইন স্টাডি করে ১১টি উচ্চ পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি বাচাই করা হয়েছে। শুধু উচ্চ পুষ্টির সবজি চাষের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি, পাশাপাশি খাবারের যাতে বৈচিত্র্য আনা যায়, এজন্য কমিউনিটিতে রন্ধন প্রদর্শনীকেও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। প্রকল্প শুরু হয়েছে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের আগস্টে। এক বছর সময় বাড়িয়ে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পটি চলবে। এর সুবিধাভোগী রয়েছে ৮ লাখ ৯৭ হাজার ৯২৩ জন।’
নীলফামারী সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামের ভবানী চন্দ্র রায় জানান, তাদের গ্রামে ১১০টি ঘর আছে। জানো প্রকল্পের সদস্যরা বিষমুক্ত উচ্চ পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি বাগান করে দিয়েছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে ১১-১২টি করে বাগান করা হয়েছে। এক থেকে দেড় শতক জমিতে আলোচনার ভিত্তিতে বিনামূল্যে বাগান করা হয়েছে। একেকটি বাগান থেকে আশপাশের কয়েক ঘরের বাসিন্দা. বিশেষ করে গর্ভবতী ও প্রসূতি, শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা পর্যাপ্ত সুষম খাবার সংগ্রহ করতে পারছে।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘পারিবারিক পুষ্টি বাগানগুলো সুষম খাবারের অন্যতম উৎসে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবারের সঠিক রন্ধন পদ্ধতিতে গ্রামবাসী উপকৃত হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকেও কৃষকদের পরামর্শসহ বিভিন্ন উপকরণ দেয়া হচ্ছে।’