চেন্নাই টেস্টের এক দিনেই ১৭ উইকেট পতন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

তাসকিন-হাসান যুগলবন্দি। চেন্নাই টেস্টে প্রথম ইনিংসে ভারতের ১০ উইকেটের ৮টিই শিকার করেন এ দুই পেসার ছবি: এপি

চেন্নাই টেস্টে গতকাল দ্বিতীয় দিন দুই দলের মোট ১৭ উইকেটের পতন ঘটে। রোমাঞ্চকর এ লড়াইয়ে এগিয়ে থাকল স্বাগতিক ভারতই। সকালে দ্রুতই স্বাগতিকদের শেষ চারটি উইকেট তুলে নিয়ে স্কোরটা চারশর নিচেই (৩৭৬) আটকে রাখতে সমর্থ হয় সফরকারীরা। অবশ্য বোলারদের এ সফলতা কাজে লাগাতে ব্যর্থ ব্যাটিং ইউনিট। মাত্র ৪৭.১ ওভারের মধ্যে ১৪৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।

ভারতীয়রা ২২৭ রানের লিড পেয়েও নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে ফলোঅনের লজ্জা দিল না। আবারো ব্যাটিংয়ে নামলেন রোহিত শর্মারা। এ সুযোগে ৬৭ রানের মধ্যে ভারতের তিন ব্যাটারকে দ্রুত সাজঘরে ফেরালেন নাহিদ রানা, তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ফিরে গেছেন রোহিত শর্মা, জশস্বী জয়সোয়াল ও বিরাট কোহলি। তবু উচ্ছ্বাস প্রকাশের সুযোগ আছে কি শান্ত, মিরাজদের? দ্বিতীয় দিন শেষেই যে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ভারতের লিড ৩০৮ রানের! বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই পড়তে যাচ্ছে পাহাড়সম টার্গেটের সামনে। 

রোহিত, জয়সোয়াল ও কোহলির বিদায়ের পর দলকে টানেন শুভমন গিল (৩৩*) ও ঋষভ পন্ত (১২*)। দিনশেষে স্বাগতিকদের স্কোর ৮১/৩।  

আজ কোথায় গিয়ে থামবে ভারত কিংবা কত বড় টার্গেটের সামনে পড়বে বাংলাদেশ? ভারতের তারকা অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা দিনের খেলা শেষে জানালেন, তারা আরো ১২০ থেকে ১৫০ রান তুলে নিতে চান। তার কথায়, ‘আজ আমরা আউট হয়েছি, এটা খেলারই অংশ। এখন আমরা এ উইকেট থেকে আরো ১২০ থেকে ১৫০ রান তুলে নিয়ে তাদের যতটা দ্রুত সম্ভব আউট করে দিতে চাই।’

এর আগে সকালে ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতকে ৩৭৬ রানে অলআউট করে দেন তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ। তাসকিন তিনটি ও হাসান একটি উইকেট নেন। সব মিলিয়ে ৮৩ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন হাসান মাহমুদ। আর অভিজ্ঞ তাসকিন নেন ৫৫ রানে ৩ উইকেট। নাহিদ রানা ও মিরাজের শিকার একটি করে উইকেট। অর্থাৎ ভারতের ১০ উইকেটের ৯টিই নেন বাংলাদেশের পেসাররা। 

হাসান মাহমুদ ভারতের মাঠে টেস্টে ৫ উইকেট শিকারি প্রথম বাংলাদেশী বোলার হলেন। এছাড়া টানা দুই টেস্টে ৫ উইকেট শিকারি বাংলাদেশের দ্বিতীয় পেসার। টেস্টে একাধিক ৫ উইকেট শিকারি বাংলাদেশের তৃতীয় পেসারও তিনি।

বোলারদের গড়ে দেয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে লড়তে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। শুরু থেকে নিয়মিত উইকেটের পতন ঘটে। চা বিরতি থেকে ফেরার ঠিক ১০.২ ওভার পরে অলআউট অতিথিরা। আত্মহত্যার মিছিলে নাম লেখানো সাকিবদের ইনিংসের আয়ু ছিল ৪৭.১ ওভার। পেসম্যান জশপ্রীত বুমরাহ ৪৯ রানে ৪টি উইকেট নেন। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ সিরাজ, আকাশ দীপ ও রবীন্দ্র জাদেজা। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন সাকিব। এছাড়া মিরাজ ২৭, লিটন দাস ২২ রান করেন। 

মিডল অর্ডারে দলের দুই তারকা লিটন ও সাকিবের শট নির্বাচন ও আউটের ধরন নিয়ে বিস্মিত সবাই। ২৯তম ওভারে জাদেজার দ্বিতীয় বলে স্পিনের বিরুদ্ধে লিটন খেললেন সুইপ। তুলে মেরে বল বাউন্ডারি পার করতে চাইলেও বল ব্যাটে লেগে উঠল আকাশে। তখন লং লেগ থেকে দৌড়ে এসে ক্যাচটি নেন বদলি খেলোয়াড় ধ্রুব জুরেল। ৩১তম ওভারে জাদেজারই তৃতীয় বলে লিটনের মতোই উইকেট বিলিয়ে দিলেন সাকিব। তিনি উইকেট দিলেন রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে। ধারাভাষ্যকার তামিম ইকবাল ওই আউটের পর বলেছেন, ‘সাকিবের আউটে আমি বিস্মিত। রিভার্স সুইপ তো তার শট না, সে তো এই শট খেলে না!’

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত: ৩৭৬ ও ৮১/৩ (গিল ৩৩*, পন্ত ১২*; নাহিদ ১/১২, মিরাজ ১/১৬, তাসকিন ১/১৭)। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১৪৯/১০ (সাকিব ৩২, মিরাজ ২৭*; বুমরাহ ৪/৪০, জাদেজা ২/১৯, আকাশ ২/১৯, সিরাজ ২/৩০)। —দ্বিতীয় দিন শেষে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন