আড়িয়াল খাঁ নদের তীরে বাঁধ নির্মাণ

মাদারীপুরে ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে পাঁচ ইউনিয়ন

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, মাদারীপুর

ছবি : বণিক বার্তা

প্রতি বছরই আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে বিলীন হয়েছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এবার মাদারীপুরের শিবচরে নদের ভাঙন ঠেকাতে নির্মাণ করা হচ্ছে স্থায়ী বেড়িবাঁধ। ২২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মীয়মাণ সাড়ে ছয় কিলোমিটার বাঁধের ৮০ শতাংশের কাজ শেষ হয়েছে। আড়িয়াল খাঁ নদের তীর সংরক্ষণ ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় বাঁধ নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ২০২৫ সালের জুনে। নদীপাড়ের বাসিন্দারা বলছেন, বাঁধ নির্মাণ শেষ হলে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে পাঁচটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ।

আড়িয়াল খাঁ নদের ট্রলার চালক ইদ্রিস হাওলাদারের বাড়ি শিবচর উপজেলার শিরাইল ইউনিয়ন পশ্চিম চর কাকৈড় গ্রামে। নদের ভাঙনে চারবার হারিয়েছেন ঘরবাড়ি ফসলি জমি। তার বাড়ির কাছেই নির্মাণ হচ্ছে স্থায়ী বাঁধ। হতাশা কাটিয়ে এখন তার চোখে-মুখে আনন্দ।

ইদ্রিস হাওলাদার বলেন, ‘২০ বছরে চারবার আমাদের বাড়ি আড়িয়াল খাঁ নদে বিলীন হয়েছে। প্রতি পাঁচ বছর পর নতুন করে বাড়িঘর তৈরি করতে হয়েছে। সবশেষ এখন একেবারে নদীর পাড়ে বছর তিনেক ধরে ঘর তুলছি। সবসময় আতঙ্কের মধ্যেই থাকতাম। তবে বাঁধ দেখে অনেক ভরসা পাচ্ছি।

শুধু ইদ্রিস হাওলাদার নন, তার মতো রেণু বেগম, তৈয়ব আলী মাদবর, নিজাম মুন্সি, রহিম মিয়ার গল্পও একই রকম। নদের ভাঙনে সব হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া এসব মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশ পূরণের পথে।

গত ১০ বছরে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে বিলীন হয়েছে শত শত ঘরবাড়ি, ফসলি জমি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা। এতে নিঃস্ব হয়েছে অনেক পরিবার। এবার বাঁধ নির্মাণের ফলে নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন এখানকার বাসিন্দারা। এমনই একজন উৎরাইল ইউনিয়নের বাসিন্দা নিজাম মুন্সী। নদের ভাঙনে তার সব শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে শিরুয়াইল ইউনিয়নের চর কাকৈড় গ্রামে অন্যের জমিতে ঘর তুলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে নৌ-বাহিনীর তত্ত্বাবধানে কাজটি বাস্তবায়ন করছে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক শেখ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘কাজের গুণগত মান ঠিক রেখে প্রকল্পটি দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আগামী বছরের জুনের মধ্যেই প্রকল্পটির সব কাজ শেষ করে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে পারব।

প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে সুবিধা পাবে বহেরাতলা, শিরুয়াইল, নিখলী, দত্তপাড়া সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সানাউল কাদের খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘শিবচরে প্রতি বছরই আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে শত শত বাড়িঘর ভেঙে যায়। সাড়ে ছয় কিলোমিটার টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। অঞ্চলের মানুষ এখন নিরাপদে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করতে পারবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন