আলোচনা সভায় বক্তারা

হীন আক্রমণের শিকার হয়েও ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রের পক্ষে কথা বলেছেন অমর্ত্য সেন

বণিক বার্তা অনলাইন

নানা সময়ে নানা ভাবে আক্রমণের শিকার হয়েও ভারতীয় সমাজ ও সংস্কৃতির ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রের পক্ষে ওকালতি করেছেন নোবেল বিজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। বক্তারা বলেন, তিনি যখন শাসনব্যবস্থার ধরণ সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর)  রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) ভবনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।  অমর্ত্য সেনের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে 'অমর্ত্য সেন: দ্য লায়ন হু ডিফাইস উইন্টার' শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বিআইডিএস। 

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, অমর্ত্য সেনের স্বীকৃতি ভারত নয় শুধু, বিশ্বব্যাপী তকর স্বীকৃতি কিছুটা ব্যতিক্রম। বিশ্বব্যাপী তার মতামত খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়৷ তার এ গ্রহণযোগ্যতা শুধুমাত্র তার নিজের জন্য নয়, তাকে ঘিরে মানুষদের জন্যও। 

তিনি বলেন, পৃথিবীতে খুঁজলে অমর্ত্য সেনের মতো খুব কম অর্থনীতিবিদ পাওয়া যাবে যারা প্রভাবিত করার ক্ষমতা রয়েছে। রাজনীতি এবং নীতি নির্ধারণের পৃথিবীতে অমর্ত্য প্রভাবিত করার সে ক্ষমতা রয়েছে। ভারতের অর্থনীতির উপর গবেষণা, দার্শনিক বিচক্ষণতা এবং পলিসি সুপারিশে মতামতের প্রভাব তার তাত্ত্বিকতার সাথে সম্পূর্ণভাবে সংযুক্ত। 

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, অমর্ত্য সেন বিশ্ব নাগরিক ছিলেন এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তিনি কি শুধু নিজেকে বিশ্ব নাগরিক মনে করেন? ১৯৯৮ সালে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর সেখান থেকে সরাসরি ঢাকায় এসেছিলেন। এখানে তার শিশুকাল কেটেছিলো। আমরা একটা লোক পত্রিকা প্রকাশ করেছিলাম। তিনি এসে সেন্ট গ্রেগরি স্কুলে যান, পুরনো বাড়ি দেখতে যান। 

জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সামাজিক বিষয়ক বিভাগের সাবেক গবেষণা প্রধান এস নজরুল ইসলাম বলেন, অমর্ত্য সেনের অ্যাক্টিভিজম শুধুমাত্র তত্ত্বে আটকে থাকেনি। মোদি সরকারের সাম্প্রদায়িক চিন্তা, নীতির প্রত্যক্ষ বিরোধিতা করেছেন তিনি। তার এ খোলামেলা এবং সোচ্চার অবস্থান মোদি সরকারের কাছ থেকে যথেষ্ট ক্ষোভের কারণ হয়েছিল। এরপর নানাভাবে তিনি অপমান ও হয়রানির শিকার হয়। তাকে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। শান্তি নিকেতনের যে অংশে অমর্ত্য সেনের পৈতৃক বাড়ি অবস্থিত তার একটি অংশের মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো নীচতার পরিচয় দিয়েছে। এভাবে শোচনীয় এবং হীন আক্রমণের শিকার হয়েছেন। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন