চিকিৎসাবিষয়ক পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলোর আগে সাধারণত বিভিন্ন রকম প্রস্তুতিমূলক ব্যাপার থাকে। নির্ভুল ফলাফল পেতে এসব ক্ষেত্রে প্রস্তুতি রাখা জরুরি। কিডনির নানা সমস্যা জানতে যে ক্রিয়েটিনিন টেস্ট করা হয় সেই টেস্টের জন্য বিশেষ প্রস্তুতির দরকার হয় না। তবে এক্ষেত্রেও কয়েকটি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হয়। এক্ষেত্রে নিম্নলিখিত নির্দেশনাগুলো লক্ষ রাখতে হবে রোগীদের—
চিকিৎসকের পরামর্শ: আপনি যে চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন পরীক্ষার আগে অবশ্যই তার পরামর্শ নিন। আপনার শারীরিক অবস্থা, রোগের সর্বশেষ পরিস্থিতি ইত্যাদি বিবেচনা করে তিনি আপনাকে কী কী বিষয় পালন করতে হবে এবং কোনগুলো বর্জন করতে হবে, সে বিষয়ে নির্দেশনা দিতে পারেন। রোগী গর্ভবতী থাকলে সেটাও চিকিৎসককে জানাতে হবে।
ওষুধের বিষয়ে তথ্য: আপনি বর্তমানে কোনো ওষুধ নিচ্ছেন কিনা, তা চিকিৎসককে জানিয়ে রাখুন। কিছু ওষুধ আছে যেগুলোর কারণে ক্রিয়েটিনিন মাত্রার হেরফের হতে পারে। চিকিৎসক সেসব ওষুধ সাময়িক বন্ধ রাখতে বলতে পারেন। বিশেষত সিমেটিডাইন, অ্যাসপিরিন, ইবুপ্রোফেন, সেফালেক্সিন-জাতীয় ওষুধ সেবন করলে অবশ্যই তা চিকিৎসককে জানাবেন। এছাড়া ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য কেমোথেরাপি ড্রাগ গ্রহণ করলেও তা চিকিৎসককে অবশ্যই জানাতে হবে।
খাওয়া-দাওয়া: বিভিন্ন টেস্টের ক্ষেত্রে সাধারণত খাওয়ার-দাওয়ার ব্যাপারে উপবাস বা বিশেষ খাবার খাওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা থাকে। ক্রিয়েটিনিন টেস্টের ক্ষেত্রে এমন কোনো ব্যাপার নেই। এ পরীক্ষার আগে না খেয়ে থাকার দরকার হয় না। তবে অতিরিক্ত প্রোটিনজাতীয় খাবার খাবেন না। এ ধরনের খাবার পরীক্ষার ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি এ টেস্টের সঙ্গে অন্যান্য পরীক্ষা, যেমন লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা বা রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষার দরকার হলে সেক্ষেত্রে বিশেষ কোনো নির্দেশনা থাকতে পারে। পরিস্থিতি বুঝে চিকিৎসক সেসব নির্ধারণ করে দেবেন।
পানি পান: এ সময় স্বাভাবিক পরিমাণেই পানি পান করবেন। এমনকি তরলজাতীয় খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রেও স্বাভাবিক পরিমাণ বজায় রাখবেন। কেননা, অতিরিক্ত পানি পান বা তরল গ্রহণ রক্তের নমুনাকে পাতলা করে দিতে পারে।
শরীরচর্চা ও কায়িক শ্রম: স্বাভাবিক মাত্রার কায়িক পরিশ্রম, শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করলে সমস্যা নেই। তবে এ টেস্টের আগে ভারী কাজ বা ভারী ব্যায়াম না করাই ভালো।
লেখক: কিডনি, মেডিসিন ও ডায়াবেটিস রোগ বিশেষজ্ঞ
কনসালট্যান্ট, ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল