বৈশ্বিক খাদ্য ব্যয় নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে ইউরোপীয় উৎপাদন

বণিক বার্তা ডেস্ক

চলতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট গম উৎপাদন হবে ১৩ কোটি ১৫ লাখ টন ছবি: রয়টার্স

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক খাদ্য উৎপাদন খাতে। বিরূপ আবহাওয়ায় ফসলের উৎপাদন ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে। ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। তবে এ পরিস্থিতিতে আশার আলো দেখাচ্ছে ইউরোপীয় অঞ্চলের গম উৎপাদন। খবর দ্য ন্যাশনাল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যে আমেরিকা ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হলেও সমৃদ্ধ হচ্ছে ইউরোপীয় রুটির ঝুড়িখ্যাত অঞ্চলটি। 

এক্ষেত্রে বৈশ্বিক খাদ্য ব্যয় কমাতে সহায়ক হবে ইউরোপীয় গমের উৎপাদন।

ইউরোপের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে বসন্তকালীন পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের ফলে জমি অত্যন্ত উর্বর হয়েছে। অঞ্চলটিতে এ সময়ে গম উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের শীর্ষ গম সরবরাহকারী অঞ্চলটি গত বছরের রেকর্ড শীর্ষ দামের তুলনায় এ বছর অর্ধেকের বেশি দাম কমিয়েছে। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি বৈশ্বিক খাদ্য আমদানি খরচ কমবে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হবে। তবে তারা এও বলছেন, আগামী জুনের আবহাওয়ার ওপর এখনো অনেক কিছু নির্ভর করছে। যেহেতু বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর রিজার্ভের সংকট অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে প্যারিসভিত্তিক অ্যাগ্রিটেলের সিনিয়র অ্যানালিস্ট সেবাস্তিয়ান পনসেলেত বলেন, ‘আমাদের এখনো ফসল কাটার অনেক পথ বাকি। যদিও এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি ইতিবাচক আছে।’

প্রতিবেদন বলছে, এখন পর্যন্ত ইউরোপীয় গম উৎপাদন প্রাক্কলনের তথ্য ইতিবাচক। মার্কিন কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ মৌসুমে ইউরোপীয় শস্যের ব্যাপক উৎপাদন বিশ্বব্যাপী গম উৎপাদনকে নতুন রেকর্ড উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, চলতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট গম উৎপাদন হবে ১৩ কোটি ১৫ লাখ টন। 

ফরাসি কৃষকদের সংগঠন এজিপিবির সাধারণ সম্পাদক ফিলিপ হিউসলে বলেন, ‘এপ্রিল ও মে মাসে বৃষ্টিপাতের পর গাছপালা সত্যিই সুন্দর হয়ে উঠেছে। এখন সূর্যের আলো আসতে শুরু করেছে।’ জার্মানির কৃষক অ্যাসোসিয়েশন ডিবিভির কৃষি বিভাগের প্রধান জোহান মেয়ারহোফার বলেন, ‘ঠাণ্ডা ও আর্দ্র আবহাওয়া জার্মানির ফসল উৎপাদনের জন্য সহায়ক হয়েছে।’ 

অন্যদিকে অ্যাগ্রিটেল জানিয়েছে, খরা থেকে পুনরুদ্ধারের কারণে রোমানিয়ায় ফসল উৎপাদন এ বছর বছরওয়ারি ১৩ শতাংশ বাড়তে পারে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে কৃষিকাজ পরিচালনা করেন রিকার্ডো লুইস। তিনি বলেন, ‘যদি শিগগিরই বৃষ্টি হয়, তবে কিছু এলাকায় উৎপাদন খুব ভালো হতে পারে।’

কৃষি পরামর্শক সংস্থা সভইকোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আন্দ্রে সিজভ বলেন, ‘রাশিয়ার ফসল উৎপাদনও অন্যান্য বছরের গড়ের তুলনায় এ বছর ৭ শতাংশ বেশি হতে পারে। যদিও দেশটির উৎপাদন ২০২২ সালের রেকর্ড অতিক্রম করবে না।’ তথ্য বলছে, রাশিয়ার বিশাল গমের মজুদের কারণে ২০২৩-২৪ সময়ের মধ্যে দেশটির রফতানি সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন