সিলেট
অঞ্চলের কৃষকের মাঝে চীনাবাদাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে। চলতি মৌসুমে বিভাগের চার জেলায় ২ হাজার ৯৯
হেক্টর জমিতে চীনাবাদাম চাষ হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছে ৩ হাজার ৬৭৩
টন। এতে অন্তত ৪০ কোটি টাকার
চীনাবাদামের বাণিজ্য হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানায়। কৃষক পর্যায়ে প্রতি মণ বাদাম বিক্রি
হয়েছে প্রায় ৪ হাজার টাকায়।
কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, এবার প্রতি ৩০ শতক জমিতে ২৩৪ কেজি বা পৌনে ছয় মণ চীনাবাদাম উৎপাদন হয়েছে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয়েছে পৌনে দুই টন চীনাবাদাম। সিলেট বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায়। এ উপজেলায় স্থানীয় কৃষক খেত থেকে তোলা কাঁচা বাদাম প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার আড়তদাররা এ চীনাবাদাম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এ বাদামই খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ২০০ টাকারও বেশি দরে বিক্রি করা হয়। প্রতি কেজি কাঁচা বাদাম ১০০ টাকা করে বিক্রয় হলে এক মণ বাদামের বর্তমান বাজারমূল্য ৪ হাজার টাকা। এ হিসাবে এক কেদার জমিতে ২৩ হাজার ৪০০ টাকার বাদাম উৎপাদন হয়েছে। এক কেদার জমিতে চাষাবাদে সাকল্যে খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। বাকি ১৩ হাজার ৪০০ টাকা লাভ হয়েছে বলে বাদামচাষী ও কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে। এ বছর সরকারিভাবে বাদামের বীজ ও সার দেয়া হয়েছিল। তবে কৃষকের অভিযোগ তা ছিল অপ্রতুল।
কৃষি বিভাগ আরো জানিয়েছে, এ বছর সুনামগঞ্জ জেলায় ১ হাজার ৭২৬ হেক্টর, সিলেট জেলায় ১৫৫, মৌলভীবাজার জেলায় ৬২ ও হবিগঞ্জ জেলায় ১৫৬ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছিল।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার কৃষক সমশিদ আলী জানান, বাদাম চাষে তুলনামূলক খরচ কম। জমিতে হালচাষ করে বাদামবীজ মাটিতে বপন করলেই হলো। এরপর সময় সময় যত্ন নিতে হয়। দিতে হয় ইউরিয়া সারও। ধানের জমি থেকে বাদামের জমিতে সার ও কীটনাশক তুলনামূলক কম লাগে। গত বছরের চেয়ে এবার বাদামের ফলনও ভালো হয়েছে। একই উপজেলার আরেক কৃষক রফিকুল ইসলা জানান, চলতি মৌসুমের বাদাম তোলা শেষ হয় গেছে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের কৃষক মঈন উদ্দিন বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চীনাবাদাম চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেট আঞ্চলিক অফিসের উপপরিচালক মোহাম্মদ কাজী মজিবুর রহমান বলেন, ‘সিলেট অঞ্চলের মাটি চীনাবাদাম চাষের বেশ উপযোগী। এ কারণে এখানকার কৃষক বাদাম চাষে উৎসাহী হচ্ছেন। বিশেষ করে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বাদাম চাষ করা হয়। সিলেট অঞ্চলে এবার ৩ হাজার ৬৭৩ টন বাদাম উৎপাদন হয়েছে। ৪ হাজার টাকা মণ ধরে হিসাব করলে দেখা যায় প্রায় ৪০ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে বাদামচাষীদের।’