সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তি রফতানি

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় বিকল্প উৎপাদনে ঝুঁকছে চীন

বণিক বার্তা ডেস্ক

৭ ন্যানোমিটার চিপ তৈরির দাবি জানিয়েছে এসএমআইসি ছবি: ব্রুকিংস

প্রযুক্তি খাতে চীনের আধিপত্য রোধে তথ্যচুরির অভিযোগ এনে সব ধরনের রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় চীনের প্রযুক্তি খাতে তেমন কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। কেননা কোম্পানিগুলো বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোচিপ তৈরি করছে এবং অধিকাংশই অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্য। খবর গিজমোচায়না।

চীনের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চিপ উৎপাদনে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ নিষেধাজ্ঞার কারণে এনভিডিয়া করপোরেশন ও অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেসের (এএমডি) মতো মার্কিন প্রতিষ্ঠান চীনে আধুনিক চিপ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চীনের বাজারের জন্য আলাদা ভার্সনের চিপ তৈরির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করেছে কোম্পানিগুলো।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব চিপ উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়নি। এছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর যেকোনো কাজ সম্পাদনে ১০-৩০ শতাংশ বেশি সময় নেবে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত ভালো মানের চিপের তুলনায় আরো ব্যয়বহুল। চীনের বাজারের জন্য কম আধুনিক চিপ তৈরি করা হলেও তা দেশটিতে থাকা কোম্পানিগুলোর জন্য সহায়ক।

বর্তমানে এনভিডিয়া চীনের বেশ কিছু বড় প্রযুক্তি কোম্পানিকে এইচ৮০০ চিপ সরবরাহ করছে। এদের মধ্যে টেনসেন্ট, আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং লিমিটেড ও বাইদু উল্লেখযোগ্য। এক বিবৃতিতে এনভিডিয়া জানায়, বাজারে যে প্রতিযোগিতা বিদ্যমান তা নষ্ট করতে মার্কিন সরকার আগ্রহী নয়। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বাণিজ্যিক পরিষেবা দিতে পারবে। যার মধ্যে ভোক্তাদের ক্লাউড পরিষেবা দেয়ার বিষয়টি রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র সেমিকন্ডাক্টরের ওপর দুই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। প্রথমত, চিপের কার্যক্ষমতার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে সামরিক খাতের জন্য সুপার কম্পিউটার বানানোর উদ্যোগ ব্যাহত হবে। দ্বিতীয়ত, চিপ থেকে চিপে ডাটা স্থানান্তরের গতিতে সমস্যা হয়েছে। যেটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর প্রভাব ফেলে।

উন্নত চিপ তৈরিতে যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র সেগুলো রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৪-১৬ ন্যানোমিটার প্রসেস নোড রয়েছে। চীন যেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও ব্যালাস্টিক মিসাইলের উন্নয়ন না করতে পারে এসব বিষয়ও নিষেধাজ্ঞার অন্তর্গত। এতসব উদ্যোগের মধ্যেও এ খাতে এগিয়ে যাচ্ছে চীন। দেশটি এরই মধ্যে ১৪ ন্যানোমিটার থেকে ছোট আকারের চিপ তৈরি করতে পেরেছে। উদাহরণস্বরূপ, চীনের সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন (এসএমআইসি) গত বছর দাবি করে, প্রতিষ্ঠানটি সফলভাবে ৭ ন্যানোমিটারের চিপ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। তবে এ চিপের সক্ষমতার বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস ও তাইওয়ানের ধারেকাছেও নেই চীন। তবে ২০২৫ সাল নাগাদ মেড ইন চায়না প্রকল্পের অংশ হিসেবে দেশটির বিভিন্ন কোম্পানি সেমিকন্ডাক্টর খাতের বিভিন্ন অংশে ভালো অগ্রগতি অর্জন করেছে। চীনের সেমিকন্ডাক্টর খাতে বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে ফ্যাবলেস ফার্মের মধ্যে ঝাওজিন, ইউনিস, হিসিলিকন এবং ইন্টিগ্রেটেড ডিভাইস উৎপাদনকারী হিসেবে ইয়াংটজে মেমোরি টেকনোলজি করপোরেশন ও চ্যাংজিন মেমোরি টেকনোলজিস রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন