নবজাতকের জন্ডিস

জেনে রাখা ভালো

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: এফটিসিডিএন

জন্মকালে জন্ডিসে আক্রান্ত হয় অনেক নবজাতক। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাতে খুব বেশি ভয়ের কিছু থাকে না। কারণ শিশুরা আক্রান্ত হয় ফিজিওলজিক্যাল জন্ডিসে। এ জন্ডিস ভালোও হয়ে যায় খুব দ্রুত। আর যারা প্যাথলজিক্যাল জন্ডিসে আক্রান্ত হয় তাদের ক্ষেত্রে দরকার হয় বাড়তি সতর্কতার। 

জন্ডিসে আক্রান্ত হলে শিশুর শরীরের ত্বক, চোখের সাদা অংশ কিংবা মিউকাস ঝিল্লি হলুদাভ বর্ণ ধারণ করে। জন্ডিসে আক্রান্ত হলে শিশুর হাতের তালু হলুদ হয়ে যেতে পারে। সাধারণত শিশুর মুখ, হাত ও বুক বা পেটের ওপর পর্যন্ত হলুদ হতে দেখা যায়। 

যুক্তরাজ্যের এনএইচএস ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, জন্ডিসে আক্রান্ত শিশু অনেক ঘুম ঘুম বোধ করতে পারে। পাশাপাশি জন্ডিসে আক্রান্ত নবজাতকের মলের রং হলুদ বা কমলা হতে পারে। শিশুর প্রস্রাবও হলুদ হয়ে থাকে। 

শিশু জন্ডিসে আক্রান্ত হলে কিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। শিশু জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছে মনে হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তা না হলে বিলিরুবিনের মাত্রা অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে। তাতে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে শিশু।

এ সময় নিয়ম করে শিশুকে ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। কারণ বিশেষত ফিজিওলজিক্যাল বা স্বাভাবিক জন্ডিসের মূল চিকিৎসাই হচ্ছে শিশুকে ঠিকমতো বুকের দুধ খাওয়ানো। রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে শিশুকে ফটোথেরাপি বা আলোক চিকিৎসা দেয়া যায়। যদিও এ চিকিৎসা পদ্ধতির উপকারিতা ও কার্যকারিতা নিয়ে মতভেদ রয়েছে অনেকের মধ্যে। তা সত্ত্বেও জন্ডিস আক্রান্ত নবজাতকের চিকিৎসায় এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। 

তার পাশাপাশি প্রতিদিন সকালে নবজাতককে আধা ঘণ্টা করে রোদ পোহানোরও পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। তবে এর থেকে বেশি সময় ধরে শিশুকে রোদে না রাখাই ভালো। কারণ সূর্যের কড়া রোদ ও অতিবেগুনি রশ্মি শিশুর ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুকে নিরাপদ রাখতে আগে থেকেই সতর্ক থাকতে হবে বাবা-মাকে। সবদিকে রাখতে হবে নজর। গর্ভাবস্থায় অবশ্যই মায়ের এবিও, আরএইচ রক্ত গ্রুপ পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। নবজাতকদের জন্ডিসের ঝুঁকির কথা মাথায় রাখতে হবে। তাই জন্মের তিন-পাঁচ দিন বয়সে বিলিরুবিন পরীক্ষা করা উচিত।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে শিশুকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর হলদেটে মনে হলে বাবা-মা যেন অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পাশাপাশি শিশুকে ঠিকঠাক বুকের দুধ পান করিয়ে যেতে হবে। আর কোনোভাবেই এর মাত্রা বেশি বাড়তে দেয়া যাবে না। ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শমতো পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে করে দ্রুত শিশু এ সমস্যা থেকে উদ্ধার পেতে পারে।  

তবে এর পরও যেসব নবজাতক উচ্চমাত্রার জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছিল, পরবর্তী সময়ে তাদের শ্রবণশক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ঠিকভাবে হচ্ছে কিনা, সেদিকে নজর রাখতে হবে। কোনো সমস্যা মনে হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। 

আবার শিশু খাওয়া বন্ধ করে দিলে বা কমিয়ে দিলে, জ্বর বা সংক্রমণের লক্ষণ থাকলে কিংবা রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎকের পরামর্শ নিতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন