বাস-অটোরিকশা ধর্মঘটে ভোগান্তি

রাজশাহীতে বিএনপির গণসমাবেশ আজ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, রাজশাহী

রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ আজ শনিবার। নগরীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে বেলা ১১টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ নেতারা এতে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা। এদিকে বিএনপির সমাবেশের আগে চলমান বাস ধর্মঘটের মধ্যে এবার সিএনজিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা থ্রি-হুইলারেরও ধর্মঘট ডেকেছে রাজশাহী জেলা মিশুক-সিএনজি মালিক সমিতি। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। দ্বিগুণ ভাড়ায়ও মিলছে না যানবাহন। আবার কোনো উপায়ে গাড়ির ব্যবস্থা করা গেলেও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে পথে পথে।

ধর্মঘটের কারণে গত বৃহস্পতিবার থেকে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে পড়ায় আগেভাগেই রাজশাহীতে আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। গতকাল বিকালের মধ্যেই মাদ্রাসা মাঠের পাশের শাহ মখদুম ঈদগাহ মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। অনেক নেতাকর্মী গত তিনদিন ধরে সেখানে থাকা অস্থায়ী তাঁবুতেই অবস্থান করছেন। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয় খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যাওয়া। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার মধ্যে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়েও আসেন বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা। তবে পথে পথে বাধা দেয়ার অভিযোগ করছেন তারা।

নওগাঁ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বাইজিদ হোসেন পলাশ জানান, গণসমাবেশে অংশ নেয়ার উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার বিকালে তারা রাজশাহীতে এসে পৌঁছেছেন। তাদের বহরে রয়েছেন কয়েক হাজার নেতাকর্মী। সবার একসঙ্গে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেকোনো মূল্যে তারা সমাবেশ সফল করতে চান। তাই নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে জড়ো হয়েছেন বলেও জানান।

বগুড়া শহর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সোলাইমান আলী বলেন, রাজশাহী আসার পথে পুলিশ ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা তাদের অনেক স্থানেই বাধা দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত নাটোরে তাদের গাড়িবহর আটকে দেয়া হয়। গাড়িতে চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছিল। সেগুলোসহ গাড়ি ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে সব বাধা উপেক্ষা করেই প্রায় ২৮ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে রাজশাহীতে পৌঁছেছেন তারা। সোলাইমান আলী আরো বলেন, বিভাগীয় সমাবেশ শেষে তারা ঘরে ফিরবেন না, সোজা ঢাকার পথে পাড়ি দেবেন। দাবি আদায়ের পর সবাই ঘরে ফিরবেন বলেও জানান।

এদিকে মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধসহ ১০ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পরিবহন বন্ধ রেখেছে পরিবহন মালিক সমিতি। বাস ধর্মঘটের ভেতরেই গতকাল দুপুরে জেলা মিশুক-সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতিও ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়। ফলে অনেকটা অলস সময় কাটছে রাজশাহীর পরিবহনসংশ্লিষ্টদের। ধর্মঘটে রাজশাহীর পথঘাট ফাঁকা। নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাস-সিএনজি অটোরিকশা কাউন্টার-স্টপেজগুলো ঘুরে দেখা গিয়েছে সুনসান নীরবতা। দু-একজন যাত্রী এলেও বিকল্প যানে তারা পাড়ি দিচ্ছেন নিজ গন্তব্যে।

রাজশাহী বিভাগীয় মালিক সমিতির সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব বলেন, বিভাগজুড়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পরিবহন ধর্মঘট পালন হচ্ছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। ধর্মঘটে যাত্রী দুর্ভোগের কথা স্বীকার করলেও এটি রাজনৈতিক কোনো দলের কর্মসূচির বিরুদ্ধে নয় বলে দাবি করেন পরিবহন মালিক নেতা। তবে এটি সরকারি ধর্মঘট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। তিনি বলেন, দেশের মানুষ সব বোঝে। কিন্তু কোনো বাধা দিয়েই কাজ হচ্ছে না। মানুষ ঠিকই রাজশাহীর দিকে আসছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন