মহাসড়কে রফতানিযোগ্য পোশাক চুরি বন্ধে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহাসড়কে রফতানিযোগ্য পোশাক পণ্য চুরি রফতানিকারকদের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব চুরি বন্ধ করতে পুলিশের নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। গতকাল পোশাক পণ্য প্রস্তুত রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এক সভায় আহ্বান জানানো হয়।

সভায় বক্তারা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পোশাক শিল্পের রফতানি পণ্য চুরির ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। একটি সংঘবদ্ধ চক্র ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্যবাহী লরি থেকে পোশাক পণ্য চুরি করছে, যা বন্ধের ব্যবস্থা উপায় নির্ধারণে রফতানিকারক, পরিবহন মালিক, পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন।

সভায় বিজিএমইএ বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির নেতারা বলেন, আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও চুরির ঘটনা রফতানিকারকদের বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেয়। তাছাড়া বেশির ভাগ সময়ই পণ্য ক্রেতাদের হাতে পৌঁছনোর পর চুরির ঘটনা ধরা পড়ে। এতে বিদেশী ক্রেতাদের আস্থা হারানোর প্রবল আশঙ্কা থাকে।

ঢাকার বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে দুই অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে অনুষ্ঠিত সভায় বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, সহসভাপতি মো. শহিদউল্লাহ আজিম, বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মজুমদার, নির্বাহী সভাপতি সৈয়দ মো. বখতিয়ার, সাধারণ সম্পাদক রুস্তম আলী খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দুই সংগঠনের নেতারা সভায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পোশাক শিল্পের রফতানি পণ্য চুরি বন্ধের ব্যবস্থা উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। উপস্থিত নেতারা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পোশাক কারখানাগুলোকে ট্রাক কাভার্ড ভ্যানের লাইসেন্সসহ চালক, হেলপারদের ছবি এবং ট্রাভেল ডকুমেন্ট রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

বিজিএমইএ নেতারা পরিবহনের সময় পণ্য চুরি প্রতিরোধের পদক্ষেপ হিসেবে পণ্যবাহী সব কার্গো ভ্যানে জিপিএস ট্র্যাকার নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ সবুজ শিল্প হিসেবে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে এবং অর্জন আমাদের সবাইকে ধরে রাখতে হবে।

তিনি যোগ করেন, চুরির ঘটনা বন্ধ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, বিশেষ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে মহাসড়কে নজরদারি আরো জোরদার করতে হবে।

বিজিএমইএর তথ্যানুসারে, কয়েক বছর ধরেই মহাসড়কে ধরনের চুরির ঘটনা বাড়ছে। ২০১৯ সালে ধরনের ঘটনা ঘটেছিল মাত্র দুটি। ২০২০ সালে যেখানে সংখ্যাটা এসে দাঁড়ায় নয়টিতে। আর চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত এমন ঘটনার তথ্য পাওয়া গিয়েছে ২২টি।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, চুরির প্রকৃত সংখ্যা এর থেকে আরো বেশি হতে পারে। ক্রেতাদের আস্থা হারানো সম্ভাব্য ক্রয়াদেশ হারানোর ভয়ে অনেক রফতানিকারক বিষয়টা তাদের জানান না। বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের অর্থনীতি রফতানিযোগ্য পোশাক খাতের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। কিন্তু বারবার চুরির ফলে বাংলাদেশের পোশাক খাতের ছড়িয়ে থাকা ব্যাপক সুনাম নষ্ট হতে পারে। ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। যার প্রভাব পড়তে পারে দেশের রফতানি আয়ের ওপর।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন