ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আজ ৫৩তম সমাবর্তন

কালো গাউন-টুপিতে মুখর ক্যাম্পাস

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাবির ৫৩তম সমাবর্তন উদযাপন করতে গতকাল কালো রঙের বিশেষ গাউন ও টুপি পরে ক্যাম্পাসে আসেন সদ্য স্নাতকরা। ফ্রেমবন্দি করেন বিশেষ মুহূর্তগুলো ছবি: কাজী সালাহউদ্দীন রাজু

দেশের প্রাচীনতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন আজ। তাই সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের পদচারণায় মুখর পুরো ক্যাম্পাস। আয়োজনের মহড়া ছিল গতকাল। তাই গায়ে কালো গাউন আর মাথায় চৌকোনা টুপি পরে হাজির হন সবাই। বন্ধু-সহপাঠীদের সঙ্গে দল বেঁধে ঘোরাঘুরি আর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তকে করেন ফ্রেমবন্দি। অনেকে পিতা-মাতার সঙ্গেও আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিতব্য আজকের সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নোবেল বিজয়ী ফরাসি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক . জ্যঁ তিরল। তাই আগেভাগেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রস্তুত করা হয়েছে মঞ্চ প্যান্ডেল। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ১৩১ কৃতী শিক্ষক, গবেষক শিক্ষার্থীকে ১৫৩টি স্বর্ণপদক, ৯৭ জনকে পিএইচডি, দুইজনকে ডিবিএ এবং ৩৫ জনকে এমফিল ডিগ্রি দেয়া হবে। সমাবর্তন বক্তা . জ্যঁ তিরলকে দেয়া হবে সম্মানসূচক ডক্টর অব লজ (অনারেস জা) ডিগ্রি।

এবারের সমাবর্তনে অংশ নিতে নিবন্ধন করেছেন ৩০ হাজার ৩৪৮ গ্র্যাজুয়েট। নিবন্ধনকৃত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে ২২ হাজার ২৮৭ জন সরাসরি কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এবং অধিভুক্ত সাত কলেজের হাজার ৭৯৬ গ্র্যাজুয়েট ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে ঢাকা কলেজ ইডেন মহিলা কলেজের ভেন্যু থেকে সমাবর্তনে অংশ নেবেন।

কার্জন হল থেকে বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে চ্যান্সেলরের শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

এর আগেই আমন্ত্রিত অতিথি গ্রাজুয়েটরা তাদের নিজ নিজ আসন গ্রহণ করবেন। এরপর একে একে সমাবর্তন বক্তার সাইটেশন পাঠ ডিগ্রি প্রদান, চ্যান্সেলরকে ক্রেস্ট প্রদান, পিএইচডি, ডিবিএ, এমফিল, স্নাতক-স্নাতকোত্তর ডিগ্রি স্বর্ণপদক দেয়া হবে। এরপর সমাবর্তন বক্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, উপাচার্য এবং আচার্যের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হবে।

সমাবর্তনকে ঘিরে গত দুদিন ধরেই ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সমাপনী পর্বে পুরো ক্যাম্পাস মাতিয়ে বেড়াচ্ছেন গ্র্যাজুয়েটরা। ছবি তুলছেন দীর্ঘদিনের স্মৃতিবিজড়িত ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে, নানা ঢঙে, একা কিংবা দলগত। কারো কারো সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তাদের গর্বিত বাবা-মা। তাদেরই একজন আশিক রব্বানী জিহান। সমাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে ক্যাম্পাসে বাবা-মাকেও নিয়ে এসেছেন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, বাবা-মায়ের অনেক সাধনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাই। এরপর গত পাঁচ বছর তাদের দোয়া প্রচেষ্টায় স্নাতক স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি। এখন ইতি ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক শিক্ষাজীবনের। তাই বিদায়ের মুহূর্তটাকে স্মরণীয় করে রাখতে তাদের সঙ্গে ক্যামেরাবন্দি হচ্ছি।

এদিকে গতকাল ছুটির দিনেও শাহবাগ, টিএসসি, নীলক্ষেত রোড, শহীদ মিনারসহ ক্যাম্পাসের আশপাশের পুরো এলাকায় যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ ছিল। এতে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। যদিও আজ সমাবর্তনের দিন সংশ্লিষ্ট এলাকায় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েটদের চলাচলের সুবিধার্থে ক্যাম্পাসের রাস্তায় গাড়ি পার্ক না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মাঠ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।

ইমামুল হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বণিক বার্তাকে বলেন, দিনভর গাড়ির হর্ন আর তীব্র শব্দে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। শিক্ষাজীবনের শেষ দিনেও ক্যাম্পাসে একটু স্বস্তি পেলাম না। সারা বছর তো বহিরাগত গাড়ি চলেই। আজকে অন্তত এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা উচিত ছিল। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগামীতে বিষয়টি বিবেচনায় রাখবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন