চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া শুধুই কি জন্ডিস?

ফিচার ডেস্ক

বিভিন্ন সময় চোখের রঙ পরিবর্তন হয়ে যায়। বিশেষ করে চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া। এটি কি শুধু জন্ডিসের কারণে হয়ে থাকে, নাকি অন্য কোনো রোগের কারণেও হতে পারে। মূলত চোখের রঙ হলুদ হতে পারে কয়েকটি রোগের কারণে। এর মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে জন্ডিস। এটি ছাড়াও লিভার ফেইলিউর, ভাইরাল হেপাটাইটিস লিভার সিরোসিসের রোগীদের চোখের রঙ হলুদ হতে পারে।

চিকিৎসকদের মতে, রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে চোখের রঙ হলুদ হয়ে যায়। চোখ হলুদ হলে শুধু জন্ডিস মনে করে অনেকে ঝাড়-ফুঁক দিয়ে সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করেন। কুসংস্কার গ্রাম পর্যায়ে বেশি দেখা যায়। দীর্ঘদিন অবস্থায় চলতে থাকে। সময়ের মধ্যে রোগটি তীব্র হতে থাকে। শরীরে দীর্ঘদিন ধরে বিলিরুবিনের মাত্রা বেশি থাকলে লিভারের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা না নিলে লিভার বিকল হয়ে যেতে পারে। কখনো কখনো বেড়ে যায় লিভার ক্যান্সারের আশঙ্কাও। বিলিরুবিন মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেলে মৃত্যুঝুঁকিও তৈরি হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার পরও রোগীরা ১০-১২ বছর স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে পারেন। তবে এসব রোগীর মাঝে মাঝে দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। আক্রান্তের ১০-১২ বছর পর শুরু হয় তাদের বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ। যেমন তাদের জন্ডিস দেখা দিতে পারে। তখন তার চোখ হলুদ হয়ে যেতে পারে। এর পাশাপাশি অন্যান্য লক্ষণও দেখা দিতে পারে। যেমন ঘুম ঘুম ভাব, কাউকে চিনতে না পারা, এলোমেলো কথা বলা। কখনো অজ্ঞান হয়ে যায় রোগীরা। এটি হয় মূলত লিভারের প্রদাহের কারণে যদি মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে।

বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেপাটোলজি বিভাগের প্রধান লিভার বিশেষজ্ঞ ডা. ফারুক আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, কোনো কোনো রোগীর খাদ্যনালির শিরাগুলো ফুলে যায় বা বেশি চাপ পড়লে ছিঁড়ে যায়। অবস্থায় তাদের বমির সঙ্গে রক্ত পড়ে, মলমূত্র ত্যাগ করার সময় রক্ত যায়। এছাড়া কেউ অজ্ঞান হয়ে যায় অথবা প্রস্রাবের রঙ হলুদ হয়ে যায়। মনে রাখতে হবে যদি কারো দীর্ঘদিন প্রস্রাবের রঙ হলুদ থাকে তাহলে বুঝতে হবে লিভার সিরোসিস থেকে তার লিভার ফেইলিউরের দিকে রোগটি চলে গিয়েছে। তবে সাধারণত লিভার ফেইলিউরের রোগীদের ক্ষেত্রে চোখ প্রস্রাবের রঙ হলুদ হয় বা জন্ডিস হয়। এসব সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

চিকিৎসক জানান, চোখ হলুদ হলে অনেকেই অপচিকিৎসার শিকার হন। বিশেষ করে রোগীদের অনেকে ঝাড়-ফুঁকের মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করেন। এটি করতে গিয়ে রোগটির ব্যাপকতা আরো বাড়িয়ে দেন তারা। ফলে একসময় তাদের মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হয়। সমস্যা সমাধানে সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই বলে জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন