করোনা সংক্রমণ বাড়ছে

চীনে খাদ্যপণ্যের মজুদ গড়ে তুলছেন সাধারণ ভোক্তারা

বণিক বার্তা ডেস্ক

চীনে আবারো করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। আসন্ন শীতে মহামারী আরো মারাত্মক রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে দেশটির সরকার। কভিডের সংক্রমণ শঙ্কায় দেশটির সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্কিত ক্রয়প্রবণতা (প্যানিক বায়িং) খাদ্যপণ্য সবজির আপত্কালীন মজুদ গড়ে তুলতে সুপারশপগুলোয় রীতিমতো হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন তারা।

দেশটির উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া কভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারী রূপে দেখা দেয় গত বছর। শুরু থেকেই নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নিয়েছে চীন। অন্য দেশগুলোর চেয়ে তুলনামূলক দ্রুততার সঙ্গেই গত বছর মহামারীকে নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয় দেশটি। আক্রান্তের সংখ্যা কমে এলে দেশটিতে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে জনজীবন। যদিও বর্তমানে দেশটিতে করোনার ক্রমবর্ধমান প্রকোপ নতুন করে শঙ্কার কারণ হয়ে উঠেছে।

সম্প্রতি আসন্ন শীত কভিড পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে চীন সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য খাদ্যপণ্যের আপত্কালীন মজুদ গড়ে তুলতে অনুরোধ করা হয়। সরকারি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সুপারশপসহ দোকানপাটে হুমড়ি খেয়ে পড়ে সবাই। এক পর্যায়ে তা রীতিমতো প্যানিক বায়িংয়ে রূপ নেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের পক্ষ থেকে ভোক্তাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সরবরাহের নিশ্চয়তা দেয়া হয়।

ক্রেতারা মূলত বাঁধাকপি, ভোজ্যতেল, চাল আটা মজুদ করছেন সবচেয়ে বেশি। সুপারমার্কেটে সবজির দোকানগুলোয় এখন অপেক্ষমাণ ক্রেতাদের লম্বা সারি দেখা যাচ্ছে। বিষয়ে বেইজিংয়ের কেন্দ্রে অবস্থিত একটি সুপারমার্কেটের সামনে বাইসাইকেলে চাল বহনকারী এক নারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, তীব্র শীত আসন্ন। অবস্থায় আমরা খাবার নিশ্চিত করতে চাই।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশটির বিভিন্ন প্রদেশের স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি মূল্য স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে। একই সঙ্গে ক্রেতাদের জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী মজুদ করে রাখারও উপদেশ দেয়া হয়। উপদেশের পরিপ্রেক্ষিতেই ক্রেতাদের মধ্যে প্যানিক বায়িংয়ের প্রবণতা দেখা যায়।

যদিও দেশটির ক্রেতাদের অনেকেই বলছেনএখনো স্বাভাবিক অবস্থার তুলনায় বাড়তি খাবার কিনে মজুদ করার মতো পরিস্থিতি আসেনি। বেইজিংয়ের স্থানীয় এক সুপারমার্কেটের এক ক্রেতার বিষয়ে মন্তব্য, সবজি কোথায় মজুদ করব? এগুলোর কোনো প্রয়োজন নেই। দৈনিক যা দরকার, আমি তা যথেষ্ট পাই। অন্যরাও বলছেন, তারা কোনো ধরনের সংকট প্রত্যাশা করছেন না, বিশেষ করে রাজধানী বেইজিংয়ে।

এদিকে চীনের করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই আশঙ্কাজনক দিকে মোড় নিচ্ছে। সম্প্রতি একটি স্কুলের কর্মচারীর করোনা শনাক্ত হলে সেখানকার শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষেই কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। আরো কেউ আক্রান্ত হয়েছে কিনা, সে বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় ত্যাগ করতে পারবে না। কোয়ারেন্টিনে থাকা শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাদের অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দেশটিতে বর্তমানে করোনার সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা তিন মাসে সর্বোচ্চে বলে জানিয়েছে চীনের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কর্তৃপক্ষ দ্য ন্যাশনাল হেলথ কমিশন (এনএইচসি) আক্রান্তরা বেইজিং, হেইলংজিয়ান, হেবেই, গানসু, ইনার মঙ্গোলিয়া, নিংজিয়া, কিংহাই, জিয়াংশি, সিচুয়ান ইউনান প্রদেশের বাসিন্দা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন