ওমানের বিপক্ষে ‘নকআউট’-এ রূপ নেয়া ম্যাচটি ২৬ রানে জিতে চলতি আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপে পরের রাউন্ডে ওঠার আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ। গতকাল ওমানের আল আমরাতে বাঁচা-মরার ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে ১৫৩ রানের সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। জবাবে ওমান ৯ উইকেটে ১২৭ রান তুলতে সমর্থ হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জ্বলে উঠলেন দলের বড় তারকা সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া সৌম্য সরকারের জায়গায় দলে ফিরেই আস্থার প্রতিদান দেন মোহাম্মদ নাইম শেখ। এ তিনজনের পারফরম্যান্সে ভর করে মহামূল্যবান জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
সাকিব ব্যাট হাতে ২৯ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলার পাশাপাশি বল হাতে ২৮ রানে নেন ৩ উইকেট। মুস্তাফিজ ৩৬ রানে শিকার করেন ওমানের ৪ ব্যাটারকে। আর নাইম ৫০ বলে খেলেছেন ৬৪ রানের অনবদ্য ইনিংস।
একটি করে উইকেট নিলেও দুর্দান্ত মিতব্যয়ী বোলিং করেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মেহেদী হাসান। সাইফউদ্দিন ৪ ওভারে ১৬ ও মেহেদী ৪ ওভারে ১৪ রান খরচ করেছেন। ৩৩ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলে ওমানের পক্ষে সর্বোচ্চ সংগ্রাহক জতিন্দর সিং।
সৌম্য সরকারের জায়গায় একাদশে ফেরা নাইম শেখ ৬৪ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে দেড়শোর্ধ্ব সংগ্রহ গড়ে দেয়ার মূল কারিগর। বামহাতি এ ব্যাটসম্যান ৩ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায় এ রান করেন। এ পথে ৪৩ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। এটা টি২০ ক্রিকেটে তার তৃতীয় ও টি২০ বিশ্বকাপে প্রথম হাফসেঞ্চুরি।
২১ রানে ২ উইকেট পতনের পর অভিজ্ঞ সাকিবকে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫৩ বলে ৮০ রান যোগ করেন নাইম। এ পার্টনারশিপের মধ্যে সাকিব ২৮ বলে ৪২ ও নাইম ২৫ বলে ৩৫ রান করেন।
অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরা হন সাকিব। জয় শেষে তিনি বলেন, অবশ্যই এটা (স্কটল্যান্ডের কাছে পরাজয়) সবাইকে আহত করেছে, কেননা হারটি আমাদের প্রত্যাশিত ছিল না। সময়টা কঠিন ছিল। আজ ওমানও ভালো খেলেছে, যদিও আমরা স্নায়ুটা ধরে রাখতে পেরেছি। মনে হয়, এ জয়টা আমাদের দলে স্থিতি আনবে। এখন পরের ম্যাচটি আমাদের জিততে হবে এবং দেখতে হবে ওমান ও স্কটল্যান্ড ম্যাচে কী ঘটে।
সাকিবের সঙ্গেই সাবলীল খেলেছেন নাইম। দলীয় ১০১ রানে সাকিবের বিদায় ঘটে। এরপর নুরুল হাসান, আফিফ হোসেন ও মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি বাঁধলেও তার কোনোটিই বড় করতে পারেননি নাইম। দলীয় ১২২ রানের সময় চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
নাইমের বিদায়ের পর মাহমুদউল্লাহ (১০ বলে ১৭) ছাড়া আর কেউই লড়াই করতে পারেননি। ফলে বড় স্কোরের সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ থামে ১৫৩ রানে। ইনিংসের শেষ বলে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
এদিকে, মাহমুদউল্লাহদের চিন্তা বাড়িয়েছে স্কটল্যান্ড। বাংলাদেশকে হারানো স্কটিশরা গতকাল পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষেও জয় তুলে নিয়েছে। দিনের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে ৯ উইকেটে ১৬৫ রান তোলে স্কটিশরা। জবাবে পিএনজি ১৯.৩ ওভারে ১৪৮ রান তুলে অলআউট হয়।
‘বি’ গ্রুপে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে স্কটল্যান্ড (০.৫৭৫)। ওমান ও বাংলাদেশের ঝুলিতে সমান দুই পয়েন্ট করে। যদিও নেট রানরেটে বাংলাদেশের (০.৫০০) চেয়ে এগিয়ে ওমান (০.৬১৩)।
এখন শেষদিনের নাটকীয়তার অপেক্ষা। বাংলাদেশ পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে পরের রাউন্ডে উঠবে, যদি ওমান হেরে যায় স্কটল্যান্ডের কাছে। আর যদি ওমান ও বাংলাদেশ উভয়ই জিতে যায় তবে তিন দলের পয়েন্ট হবে সমান ৪ করে। সেক্ষেত্রে নেট রানরেট হিসেবে শ্রেয়তর দুই দল পাবে সুপার টুয়েলভ রাউন্ডের টিকিট।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ খেলবে পিএনজির বিপক্ষে, রাত ৮টায় মুখোমুখি হবে ওমান ও স্কটল্যান্ড।