ভালো কাজের জন্য পুরস্কার, খারাপ করলে ক্ষমা পাবেন না —প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভালো কাজের জন্য যেমন পুরস্কার পাবেন, তেমনি কেউ খারাপ কিছু করলেও ক্ষমা পাবেন না। তাদেরও কঠোর শাস্তি পেতে হবে। শৃঙ্খলা বা নিয়মটা যেন বজায় থাকে সেটা আমরা নিশ্চিত করব।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে গতকাল জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন জনপ্রশাসন পদক ২০২০ ২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

কাজের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য জনপ্রশাসন পদক প্রবর্তন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জাতীয় পর্যায়ে উদযাপনের জন্য আমরা ২৩ জুলাই জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস ঘোষণা করেছি। উপলক্ষে সরকারি আমলাদের ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কার দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছি। এর মাধ্যমে যাদের ভেতরে নতুন নতুন উদ্ভাবনী চিন্তা আছে, সেগুলো বিকশিত হবে। যারা দেশের কল্যাণে কাজ করবেন, তারা পুরস্কৃত হবেন।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন। মাঠ পর্যায়ে কাজ করলে অনেক বেশি জানার সুযোগ পাওয়া যায়। আপনারা মানুষের সুবিধা-অসুবিধাগুলো জানতে পারেন। কীভাবে একেকটা এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা যায়, সেটা আপনারা সবচেয়ে ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারেন। আমি আশা করি, সেভাবেই আপনারা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করবেন।

নভেল করোনাভাইরাসজনিত মহামারীতে দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষাসহ সর্বক্ষেত্রে তৈরি হওয়া সমস্যার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখান থেকে আমাদের যত দ্রুত মুক্ত হওয়া যায়, বাংলাদেশকে মুক্ত করা যায়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। মানুষ যেন স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়মগুলো মেনে চলে, সে ব্যাপারে তাদের সচেতন করতে হবে।

দেশের অধিকাংশ মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, টিকা পাওয়ার বয়স হয়েছে এমন কোনো বাংলাদেশী বাদ যাবে না। ছাত্র-শিক্ষক থেকে শুরু করে সবার জন্য টিকা কেনা প্রয়োগ ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে।

অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় ৩৫ কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠানকে জনপ্রশাসন পদক দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক পদক বিজয়ীদের মাঝে স্বর্ণপদক, চেক, ক্রেস্ট সনদ বিতরণ করেন। এর মধ্যে ২০২০ সালের জন্য জাতীয় জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১৫টি ২০২১ সালের জন্য ২০টি পদক দেয়া হয়।

এদিকে গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী।

ভার্চুয়াল মাধ্যমে সভায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের কাছে কভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকা পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। একেবারে গ্রাম পর্যায়ে ভ্যাকসিন দেয়ার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। এমন ব্যবস্থা করা হচ্ছে যেন আইডি কার্ড দেখিয়ে সরাসরি রেজিস্ট্রেশন করে সেখানেই টিকা নেয়া যায়।

সরকারপ্রধান বলেন, এরই মধ্যে আমাদের কোটি ৮৭ লাখের মতো ভ্যাকসিন দেয়া হয়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ যেন টিকা নিতে পারে তার ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি। ভ্যাকসিন যেখানে যা পাওয়া যাচ্ছে আমরা ক্রয় করছি। তার জন্য আলাদা টাকাও রাখা আছে। প্রয়োজনে আরো টাকা আমরা খরচ করব।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের মধ্যে টিকা নিয়ে অতীতে নানা রকম ভীতি ছিল। এখন সে ভীতি কাটিয়ে উঠলেও একটা সমস্যা রয়ে গেছে। যেটা আমি মাঝে মাঝে খবর পাই, কেউ করোনা শনাক্তের পরীক্ষা করাতে চায় না। তাদের ধারণা করোনা আছে শুনলে তারা সমাজে অচ্ছুৎ হয়ে যাবে। তার সঙ্গে কেউ মিশবে না, ভয়টা করে। কিন্তু এটা তো ঠিক নয়।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তোমরা যেহেতু মানবতার সেবায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছ, এটা অব্যাহত রাখবে। মনে রাখবে, এটাই আমাদের আদর্শ, এটাই আমাদের কাজ। এটাই আমাদের জাতির পিতা শিখিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন