কমিশনের নির্দেশনার প্রভাবে বীমা খাতের শেয়ারদর চাঙ্গা

নিজস্ব প্রতিবেদক

টানা আট কার্যদিবস ধরে উত্থানের মাধ্যমে ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল দেশের প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক লেনদেন গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। সেই সঙ্গে গতকাল বিএসইসির নির্দেশনার প্রভাবে চাঙ্গা হয়ে ওঠে বীমা খাতের শেয়ারদর। আলোচ্য খাতে গতকাল অধিকাংশ শেয়ারদর বেড়েছে, সেই সঙ্গে গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ শতাংশ হয় খাতটিতে। তবে গতকাল লেনদেনে অংশ নেয়া অধিকাংশ কোম্পানি ফান্ডের বাজারদর কমেছে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার জীবন স্বাস্থ্য বীমা নিশ্চিতে বিএসইসি থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে মূলত এরই প্রভাবে গতকাল বীমা খাতের শেয়ারদর বেশি বেড়েছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট সবাই জীবন স্বাস্থ্য বীমা করলে আলোচ্য খাতের কোম্পানিগুলোর ব্যবসা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। এতে বীমা কোম্পানিগুলোর বছর শেষে ভালো মুনাফা হবে এবং কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ভালো লভ্যাংশ পাওয়া যাবে। সেই সঙ্গে কোম্পানির ব্যবসা ভালো হওয়ার মাধ্যমে শেয়ারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে বীমা খাতের শেয়ারেও বিনিয়োগ করে লাভবান হওয়ার আশা করছেন বিনিয়োগকরীরা। তবে এর ফলে আলোচ্য খাতটির শেয়ার নিয়ে বড় কারসাজির আশঙ্কা করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

তারা মনে করছেন, স্বল্প মূলধনি কোম্পানি হওয়ার কারণে এক-দুই মাস ধরে বীমা খাতের শেয়ারদর কারসাজির মাধ্যমে বাড়ানো হয়েছে। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর যৌক্তিক দরের থেকেও কয়েক গুণ বেশি হয়েছে। এখন আবার বিএসইসির নির্দেশনার ফলে বড় কারসাজির মাধ্যমে বীমা খাতের শেয়ারদর অস্বাভাবিকভাবে আরো বাড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের বেশি মুনাফা দেখিয়ে তাদের পুঁজি হাতিয়ে নেবে কারসাজি চক্র। তাই বীমা খাতের কোনো কোম্পানির শেয়ারদর যাতে অস্বাভাবিকভাবে যৌক্তিক দরের বেশি না হয় সেদিকে বিএসইসির লক্ষ রাখতে হবে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেন শুরুর পর থেকে সূচক কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এরপর সামান্য পতন হলেও পরে বড় উত্থান দেখা যায় সূচকের। সারা দিন কিছুটা উত্থান পতনের মাধ্যমে মিশ্র অবস্থায় লেনদেন শেষ হয়। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৬ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৮৪০ দশমিক শূন্য পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল হাজার ৮১৩ দশমিক ১৬ পয়েন্টে। এর আগে বছরের ১৭ জানুয়ারি সূচক সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল, সেদিন সূচক দাঁড়িয়েছিল হাজার ৮৫০ দশমিক ৪৩ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, প্রাইম ব্যাংক, রবি, আইএফআইসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, বিকন ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা, সাউথইস্ট ব্যাংক অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের।

এদিকে ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে দশমিক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ২৮৫ দশমিক শূন্য পয়েন্টে অবস্থান করছে, যা আগের দিন ছিল হাজার ২৮২ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বেড়ে গতকাল হাজার ১৯৯ দশমিক ২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবস শেষে যা ছিল হাজার ১৯২ দশমিক ৬৫ পয়েন্টে। গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে হাজার ৫৩৪ কোটি ৬২ লাখ ২৪ হাজার টাকা। এর আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে হাজার ৪১৮ কোটি ৩৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। এর আগে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি লেনদেন সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল, সেদিন লেনদেন হয়েছিল হাজার ৫৮৫ কোটি ২২ লাখ হাজার টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬৫টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১৪২টির, কমেছে ১৭৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪৮টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন