বিল্সের আলোচনা সভা

শ্রমজীবী মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

কভিড-১৯ কারণে সৃষ্ট মহামারীর প্রকোপে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমজীবী মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত অধিকার সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন শ্রমিক অধিকার রক্ষাসংশ্লিষ্টরা। গতকাল মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিল্স) উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভা থেকে আহ্বান জানানো হয়। রাজধানীর ধানমন্ডিতে বিলেসর সেমিনার হলে সভার আয়োজন করা হয়।

করোনাভাইরাসের কারণে শ্রমজীবী মানুষের ওপর সৃষ্ট সংকট মোকাবেলা, শ্রমিকের সামাজিক নিরাপত্তা, অধিকার সুরক্ষা করণীয় সম্পর্কে আলোচনার লক্ষ্যে সভার আয়োজন করা হয়।

মে দিবসের চেতনা: করোনাকালে শ্রমিকের সামাজিক নিরাপত্তা অধিকার সুরক্ষা শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিলেসর মহাসচিব নির্বাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমজীবী মানুষ কষ্টে আছে। তারা তাদের পরিবার নিয়ে শঙ্কিত। করোনার কারণে বিপুল পরিমাণ শ্রমজীবী মানুষ কাজ হারিয়েছে, যার মধ্যে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরাই বেশি। সরকারি কর্মচারী ছাড়া বেসরকারি শ্রমিকরা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।

স্বাগত বক্তব্যে বিলেসর যুগ্ম মহাসচিব ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান বলেন, মে দিবসের চেতনা হলো ঘণ্টা শ্রম, ঘণ্টা বিনোদন ঘণ্টা বিশ্রাম। কিন্তু মে দিবসের ১৩৫ বছরেও শ্রমিকদের এসব অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শ্রমিকদের ন্যূনতম অধিকার সামাজিক সুরক্ষা নেই উল্লেখ করে তিনি শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। সময় তিনি শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা এবং চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট গত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হয়েছে বলে জানান কল-কারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি বছর নতুন অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যা মোকাবেলায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সাউথ এশিয়ার ডিসেন্ট ওয়ার্ক টেকনিক্যাল টিমের ওয়ার্কার্স অ্যাক্টিভিটিস সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেন, মহান মে দিবসের আন্দোলন হয়েছিল ঘণ্টা কর্মঘণ্টার দাবিতে। কিন্তু লকডাউনে সরকার যেখানে কর্ম ঘণ্টা কমানোর কথা, সেখানে গার্মেন্ট শ্রমিকদের নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আইনের বিধান হচ্ছে, জনগুরুত্বপূর্ণ হলে অব্যাহতি দেয়া যাবে। বিষয়টি আরো স্পষ্ট হওয়া দরকার।

শ্রমিকরা করোনা ভীতি উপেক্ষা করে কাজ করলেও মালিকরা তাদের মজুরি দিতে বিলম্ব করে উল্লেখ করে শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ। 

সভাপতির বক্তব্যে বিলেসর ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসাইন বলেন, শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন, তাই তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রদান করতে হবে।

বিলেসর উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য নইমুল আহসান জুয়েলের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিলেসর গবেষণা বিভাগের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম, আইএলওর এসডি অ্যান্ড আইআর প্রজেক্টের চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার নিরান রামযুথান, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কামরুল আহসান, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম, স্কপের যুগ্ম সমন্বয়কারী এবং জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সাকিল আখতার চৌধুরী প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন