দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়েছে গতকাল। সংক্রমণ শনাক্তের ৩২১তম দিনে ২২ জন কভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে ৪৩৬ জন, যা গত নয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। দেশে কভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এপ্রিলের পর এই প্রথম দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা পাঁচশর নিচে নেমে এসেছে। এর আগে ২৬ এপ্রিল সর্বনিম্ন ৪১৮ জন করোনা পজিটিভ হয়েছিল। গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৩২৬। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩। গত ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর চার মাস পর ১০ জুন মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর গত ৫ জুলাই মৃতের সংখ্যা ২ হাজার অতিক্রম করে। এর ২৩ দিন পর ২৮ জুলাই মৃতের সংখ্যা ৩ হাজারে পৌঁছে যায়। গত ২৫ আগস্ট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজারের ঊর্ধ্বে ওঠে। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার অতিক্রম করে। গত ৪ নভেম্বর মৃতের সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর ৩৮ দিন পর ১২ ডিসেম্বর মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৬টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৮টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৫৬টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে ১১ হাজার ১১৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে বলে করোনা সংক্রান্ত সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গতকাল পর্যন্ত দেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২৭ লাখ ৭৬ হাজার ৪০১টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭ লাখ ৬৪ হাজার ৯৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। মোট শনাক্তের হার ১৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫১ শতাংশ। গতকাল বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো ৩৩৮ জন রোগী সুস্থ হওয়ায় মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯৯।
গতকাল মৃতদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ ও পাঁচজন নারী। মৃতদের সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বয়স বিবেচনায় তাদের ১৩ জনই ষাটোর্ধ্ব ছিলেন। এছাড়া ছয়জনের বয়স ৫১-৬০ বছরের মধ্যে, একজন করে তিনজনের বয়স ৩১-৪০, ২১-৩০ ও ১১-২০ বছর বয়সসীমার মধ্যে। মৃতদের ১৮ জন ঢাকা বিভাগের, তিনজন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং একজন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। এ পর্যন্ত ভাইরাসটির সংক্রমণে মৃত্যু হওয়া ৮ হাজার ৩ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৬৪ জন পুরুষ ও ১ হাজার ৯৩৯ জন নারী।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কথা নিশ্চিত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) চীনের কার্যালয়। এ পর্যন্ত বিশ্বের ২১৯টি দেশ ও অঞ্চলের ৯ কোটি ৮২ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণঘাতী এ রোগী বিশ্বজুড়ে ২১ লাখ ৯ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।