এশিয়ার প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে চাই

শামীম আহসান ব্যবস্থাপনা পরিচালক, -জেনারেশন লিমিটেড। সম্প্রতি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি -জেনারেশন লিমিটেড। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবস্থা, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, আইপিওতে আসার কারণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাত্কার নিয়েছেন মেহেদী হাসান রাহাত

কভিড-১৯-এর কারণে মানুষের মধ্যে প্রযুক্তিনির্ভরতা অনেকাংশে বেড়েছে। এতে বৈশ্বিকভাবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোর ব্যবসাও স্ফীত হয়েছে। অতিমারীকালীন বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত কেমন পারফর্ম করছে?

অতিমারীর সময়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাত এবং স্টার্টআপ জীবন রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা পালন করেছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে মুনাফা করলেও সেটির পেছনে একটি উদ্দেশ্য থাকা উচিত। আমরা সবসময় এমন ধরনের প্রকল্প নিয়ে কাজ করি, যাতে সেটি অনেক বেশি মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে। কভিডের সময়ে আমাদের কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সরকার প্রতিরক্ষা খাতের প্রযুক্তিগত অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করেছে। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির সময় দেশে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিচারপ্রার্থী অসংখ্য মানুষ সমস্যায় পড়ে যায়। অনেকের জামিন আটকে যায়। -জেনারেশন সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় মাত্র ১০ দিনের মধ্যে ভার্চুয়াল আদালত প্লাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছে। একইভাবে আমরা কৃষি মন্ত্রণালয় মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটকে সঙ্গে নিয়ে একটি ফার্টিলাইজার রিকমেন্ডেশন সফটওয়্যার তৈরি করে দিয়েছি। এর মাধ্যমে একজন কৃষক মোবাইল অ্যাপ কিংবা ডিজিটাল ইনফরমেশন সেন্টারে গিয়ে তার জমিতে কোন ধরনের ফসলের জন্য কী পরিমাণ সার প্রয়োজন হবে, সেটি সঠিকভাবে জানতে পারছেন। আমরা জরিপ করে দেখেছি, এতে কৃষকের উৎপাদনশীলতা শতভাগ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। কভিড সংক্রান্ত তথ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ড্যাশবোর্ডটিও আমাদেরই তৈরি করা। ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য টেকনোলজি সফটওয়্যার তৈরি করে দিয়েছি। এতে প্রান্তিক জনগণের ঋণ দেয়ার প্রক্রিয়া সহজ হয়েছে। সম্প্রতি মরগান স্ট্যানলির এক গবেষণায় দেখা গেছে, অনূর্ধ্ব পঁয়ত্রিশ বছরের তরুণ প্রজন্মরা ভবিষ্যতে পরিবেশ সমাজের জন্য টেকসই অবদান রাখতে পারছে না এমন কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে দেবে। আমরাও চাইছি আমাদের দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিংয়ের পাশাপাশি ইমপ্যাক্ট ওয়েটেড অ্যাকাউন্টিং চালু করুক। প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে এনভায়রনমেন্টাল, সোস্যাল অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (ইএসজি) রিপোর্টিংয়ে গুরুত্ব দেয় সেটি আমাদের কাম্য। করোনাকালে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা সহযোদ্ধা নামে একটি প্লাজমা নেটওয়ার্ক তৈরি করেছি। এর মাধ্যমে ৪৫০ মানুষকে প্লাজমা দেয়া সম্ভব হয়েছে। আমাদের ভিশন হচ্ছে আমরা কোটি মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে এশিয়ার প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে চাই। আর আমাদের মিশন হচ্ছে বাংলাদেশকে উদ্ভাবনী হাইটেক নেশনে রূপান্তর করা। এর পেছনের গল্পটি হচ্ছে দাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সবসময় পরামর্শ দেয়া হয় যে হাইটেক কাজগুলো করবে আমেরিকা, ইউরোপ, ভারত ইসরায়েলের মতো দেশগুলো। আর ডাটা এন্ট্রি, বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং, কল সেন্টারের মতো লো টেক কাজগুলো বাংলাদেশের মতো দেশগুলো করবে। কিন্তু আমরা -জেনারেশন দর্শনটিকে চ্যালেঞ্জ করেছি। এজন্য আমরা গত কয়েক বছর ধরে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ শুরু করেছি। ব্লক চেইন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, ইন্টারনেট অব থিংস সাইবার সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ করে দেশের মধ্যে শীর্ষপর্যায়ে চলে এসেছি। বাংলাদেশে -জেনারেশন একমাত্র কোম্পানি, যারা মাইক্রোসফটের লাইসেন্সিং সলিউশন প্রোভাইডার (এলএসপি) আমরা এসএপির গোল্ড পার্টনার। কাজগুলো কিন্তু আগে ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনামের বিদেশী কোম্পানিগুলো করত। দেশের সংবেদনশীল তথ্য বিদেশীদের কাছে থাকা ঠিক নয়। আমি মনে করি, ধরনের কাজগুলো দেশী কোম্পানির হাতে থাকা উচিত। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পাসপোর্ট এনআইডির মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলোর সঙ্গে দেশী কোম্পানির সংশ্লিষ্টতা কাম্য। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। দেশের পাশাপাশি বর্তমানে আমরা যুক্তরাজ্য মধ্যপ্রাচ্যসহ ১০টির মতো দেশে সেবা প্রদান করছি।

আপনি সংবেদনশীলতার কথা বলছেন। কিন্তু দেশের আর্থিক খাতে যে ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার হয়, সেগুলো তৈরির সক্ষমতা কি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর আছে?

মুহূর্তে কোর ব্যাংকিং কিংবা এসএপি সফটওয়্যার তৈরির মতো সক্ষমতা আমাদের নেই। কিন্তু আমরা তো সার্ভিসটা দিতে পারি। সেই সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে এককভাবে যাতে বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ না পায়। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করা উচিত। এতে স্থানীয় বিদেশী প্রতিষ্ঠান সবার জন্যই লাভজনক হবে।

সম্প্রতি -জেনারেশন প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নিয়েছে। পুঁজিবাজারে আসার কারণ জানতে চাই?

আইপিওতে আসার অন্যতম কারণ হচ্ছে আমাদের সফলতাগুলো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চাই। তাছাড়া তালিকাভুক্ত কোম্পানি হলে বিদেশে আমাদের অবস্থান আরো দৃঢ় হবে। পিওর সফটওয়্যার ভিত্তিক কোম্পানি হিসেবে আমরাই কিন্তু পুঁজিবাজারে প্রথম। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড হওয়ার লক্ষ্য রয়েছে আমাদের। আমরা স্বপ্ন দেখি একসময় -জেনারেশন নাসডাক বা শেনঝেন কিংবা সিঙ্গাপুর স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আমরা সবসময় এমন প্রকল্পকে বেছে নিয়েছি, যেগুলো আগে কেউ করেনি। এই যেমন ২০১০ সালে আমরাই প্রথম -কমার্স প্লাটফর্ম বাগডুম ডটকম প্রতিষ্ঠা করেছি। দেশের প্রথম ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান পেগাসাস টেক ভেঞ্চার আমরাই নিয়ে এসেছি। ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মাধ্যমে আমরা সহজ ডটকম, প্রিয় ডটকম, আজকের ডিল, হ্যান্ডিমামা ডিজিকনের মতো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছি। পরবর্তী সময়ে আমাদের অনুসরণ করে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও ভেঞ্চার অর্থায়নে এগিয়ে এসেছে।

-জেনারেশনে বিনিয়োগ করে শেয়ারহোল্ডাররা কেমন রিটার্ন পাবেন?

প্রত্যাশার চেয়ে বেশি রিটার্ন দেয়ার ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী। স্থানীয়দের পাশাপাশি বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকেও আমরা ভালো সাড়া পেয়েছি। আমরা দেশী-বিদেশী শেয়ারহোল্ডারদের আকর্ষণীয় রিটার্ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করব।

আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সেভাবে বিকশিত না হওয়ার কারণ কী?

পৃথিবীর সব দেশেই ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলো যে পরিমাণ বিনিয়োগ করে, তার সমপরিমাণ তহবিল সরকারের কাছ থেকেও পায়। অন্যান্য দেশের বড় করপোরেট কনগ্লোমারেটগুলো ভেঞ্চার ক্যাপিটালে বিনিয়োগ করলেও আমাদের এখানে কিন্তু তারা সেভাবে এগিয়ে আসছে না। মূলত সচেতনতার অভাবেই কিন্তু অনেকে ভেঞ্চার ক্যাপিটালে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছে না। বিল গেটস বাংলাদেশের বিকাশে বিনিয়োগ করেছেন। চীনের জ্যাক মা বিকাশের পাশাপাশি দারাজে বিনিয়োগ করেছেন। তারা কিন্তু বিদেশে থেকেই বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে রিটার্ন নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সুযোগ হারিয়েছে। সরকারে কাছে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অর্থায়নের জন্য তহবিল চেয়ে আসছি। সম্প্রতি কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থায়নের বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। সরকার চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ২০০-৪০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করতে পারে। সরকারের জন্য অর্থ কিছুই না। কিন্তু এতে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক উপকৃত হবে। আগামী পাঁচ বছরে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে পাঁচটি ইউনিকর্ন কোম্পানি গড়ে তোলা, ৫০ লাখ প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং জিডিপিতে শতাংশ অবদান রাখা। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন হবে।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলে থাকেন যে আমাদের দেশে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অর্থায়নে অন্যতম একটি প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে সহজ এক্সিট পলিসি না থাকা। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?

এটি ঠিক বিনিয়োগ করার পর থেকে কোম্পানিটির আইপিওতে আসা পর্যন্ত থেকে ১০ বছর সময় লেগে যায়। এত দীর্ঘ সময়ের কারণে অনেকেই ভেঞ্চার ক্যাপিটালে বিনিয়োগে আগ্রহী হয় না। এজন্য আমরা পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নীতিগত সহায়তা চেয়েছি। বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তারা -সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে দেখছে।

আগামী দিনে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোন কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক সম্ভাবনা বেশি?

কভিড-১৯ অতিমারীর সময়ে আমরা দেখেছি হেলথটেক প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো করেছে। আগামী দিনেও তাদের সম্ভাবনা ভালো থাকবে। তাছাড়া রিমোট ওয়ার্কিং টুল বা ঘরে বসে দূরে থেকেই কাজ করার সফটওয়্যার, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের -কমার্স, ইন্টারনেট ভিত্তিক বিনোদন নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান এবং -স্পোর্টসেরও ভালো চাহিদা থাকবে। হাসপাতালগুলোতে সেবা পেতে গিয়ে রোগীদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই। এক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা স্বাস্থ্য খাতের চেহারা পরিবর্তন করে দিতে চাই।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ঝুঁকির দিকগুলো সম্পর্কে জানতে চাই?

খাতে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হচ্ছে বিদেশী কোম্পানিগুলোর আগ্রাসন। আমাদের মধ্যে বিদেশপ্রীতি রয়েছে। ফলে দেখা যায় স্থানীয় কোম্পানিগুলোর কাজ পেতে ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। অথচ বিদেশীরা সহজেই কাজ পেয়ে যান। এক্ষেত্রে অংশীদারি ভিত্তিতে স্থানীয় বিদেশী প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ করার মাধ্যমে ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নতুন উদ্যোক্তাদের প্রতি আপনার পরামর্শ.....

নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, পাঁচটি বা ১০টির পরিবর্তে একটি আইডিয়া বা প্রতিষ্ঠানের ওপর ফোকাস করা উচিত। বিল গেটস এক মাইক্রোসফট নিয়ে আছে। জাকারবার্গ ফেসবুক নিয়ে আছে। কোম্পানির পথচলা মসৃণ রাখতে প্রতিষ্ঠানে নিজের কর্তৃত্ব ধরে রাখার মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। পেশাদার কর্মী অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কোম্পানিকে বড় করার দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। একীভূতকরণ অধিগ্রহণের মাধ্যমে ছোট ছোট কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মিলে একটি বড় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়া সম্ভব। আমাদের উদ্যোক্তাদেরও ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন