টানা পাঁচদিন ১৫ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় তা ১৪ হাজারের নিচে নেমে এসেছে। এতে শনাক্তের সংখ্যাও পাঁচদিন পর দুই হাজারের নিচে নেমেছে। ২৪ ঘণ্টায় কভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৮৮৮ জন। এ সময়ে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত আরো ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। কভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী, দেশের ১১৮টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ১৯৯টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আগের কিছু নমুনাসহ এ সময় ১৩ হাজার ৫৪০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্তসহ এ পর্যন্ত দেশে কভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮৭৯। আর এ রোগে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ৮০৭ জনের। ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্তে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৮ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫১টি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো ২ হাজার ৪৫৭ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছে। এখন পর্যন্ত কভিড-১৯ আক্রান্ত মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৪০৮ জন সুস্থ হয়েছে। সুস্থতার হার ৮২ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ২৩ জন পুরুষ ও ১২ জন নারী। মৃতদের ২৪ জন ষাটোর্ধ্ব। নয়জনের বয়স ৫১-৬০ বছরের মধ্যে। এছাড়া ৪১-৫০ ও ২১-৩০ বছর বয়সসীমার মধ্যে একজন করে মোট দুজন রয়েছেন। মৃতদের মধ্যে দুজন করে ১০ জন রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ এবং একজন করে দুজন চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বাসিন্দা।
দেশে এ পর্যন্ত মৃত ৬ হাজার ৮০৭ জনের মধ্যে ৫ হাজার ২০৭ জন পুরুষ ও ১ হাজার ৬০০ জন নারী। এর মধ্যে ষাটোর্ধ্ব বয়সী ৩ হাজার ৬৩৯ জন। আর ১ হাজার ৭৬৩ জনের বয়স ৫১-৬০ বছরের মধ্যে, ৮১৫ জনের বয়স ৪১-৫০, ৩৪৯ জনের বয়স ৩১-৪০, ১৫৩ জনের বয়স ২১-৩০ ও ৫৫ জনের বয়স ১১-২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৩ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
কভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে মৃতদের মধ্যে ৩ হাজার ৬৭৭ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ২৭২ জন চট্টগ্রাম, ৪১২ জন রাজশাহী, ৫০১ জন খুলনা, ২২৪ জন বরিশাল, ২৬৮ জন সিলেট, ৩০৯ জন রংপুর ও ১৪৪ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা একদিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। আর দেশে প্রথম শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৩০ জুন একদিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা অনুযায়ী, শনাক্তের সংখ্যা বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ২৬তম, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে তালিকার ৩২তম স্থানে।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম শনাক্ত হয়। গত ১১ মার্চ নভেল করোনাভাইরাসকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বিশ্বের ২১৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া এ রোগে এখন পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬ কোটি ৫৯ লাখ পেরিয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৫ লাখ ২০ হাজার।