আগামী বছরও মাস্ক পরা চালিয়ে যেতে হবে!

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষায় অনেকগুলো স্বাস্থ্য নির্দেশিকার কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকরী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে মাস্ক ব্যবহার। একদিকে নানা বিধিনিষেধের মাধ্যমে কভিড-১৯ সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে, অন্যদিকে ভ্যাকসিন তৈরিতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বছরের শেষ নাগাদ ভ্যাকসিন পাওয়া গেলেও সেটার শতভাগ কার্যকারিতা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মনে সন্দেহ রয়েছে। এজন্য ভ্যাকসিন পাওয়া গেলেও আমাদের মাস্ক পরা চালিয়ে যেতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) পরিচালক রবার্ট রেডফিল্ড সাম্প্রতিক সিনেট শুনানিতে বলেছেন, মাস্কগুলো আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, শক্তিশালী জনস্বাস্থ্য উপকরণ এবং আমি সব আমেরিকান আমাদের দেশের প্রত্যেককে মাস্ক ব্যবহারের আবেদন জানাব। মাস্কগুলো কোনো ভ্যাকসিনের চেয়ে বেশি গ্যারান্টি দিতে পারে।

কারণ ভ্যাকসিনগুলো এখনো ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রয়েছে এবং সেগুলো কতটা কার্যকর হবে তা বর্তমানে অস্পষ্ট। ধারণা করা হচ্ছে, ভ্যাকসিনগুলো প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের মধ্যে প্রতিরোধ ব্যবস্থা দিতে পারে এবং এগুলো কিছু মানুষকে অরক্ষিত করে তুলতে পারে। আবার ভ্যাকসিন না নেয়া অনেকে অসুস্থ না হয়েও ভাইরাসটি বহন করতে পারে এবং সম্প্রদায়ের মাঝে সেটি ছড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়া সবার জন্য কখন পর্যাপ্ত ডোজ সহজলভ্য হবে, সেটাও আমরা বলতে পারি না। 

এখানে শেষ লক্ষ্যটি হলো হার্ড ইমিউনিটি এবং এটা অর্জনের জন্য আমাদের পর্যাপ্ত সংখ্যক মানুষের মধ্যে কভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আমাদের কার্যকর ভ্যাকসিন লাগবে কিংবা মানুষকে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হতে দিতে হবে।

মাস্ক থেকে শিগগিরই মুক্তি না পাওয়ার মূল কারণ হলো প্রথমবার যখন ভ্যাকসিন পাওয়া যায় তখন সেটার সরবরাহ সীমিত থাকে। প্রাথমিক ডোজগুলো সম্ভবত আগে সেই ব্যক্তিদের দেয়া হবে যাদের সর্বাধিক সুরক্ষা প্রয়োজন। এর মধ্যে আছে স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, প্রবীণ গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিরা। সুতরাং এমন ব্যক্তিদের ভ্যাকসিন দেয়ার পর সরবরাহের ওপর ভিত্তি করে সাধারণ মানুষদের দেয়া হবে।

এছাড়া ভ্যাকসিনটি প্রায় ২১ থেকে ২৮ দিনের ব্যবধানে দুটি ডোজ দেয়া হবে। জনস হপকিনস ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাওসার তালাতের মতে, ভ্যাকসিন পাওয়ার পর মানুষ প্রতিরোধক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে বিকাশ করতে প্রায় ছয় থেকে আট সপ্তাহ সময় নেয়। প্রথম ডোজ পাওয়ার পর তাত্ত্বিকভাবে তারা অসুস্থ থাকতে পারে, তাই সে পর্যায়েও মাস্ক ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।

তাহলে আর কতদিন মাস্ক পরতে হবে? ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিনের অধ্যাপক মনিকা গান্ধী মনে করেন, আমাদের আরো একটা বছর মাস্ক পরতে হবে। তিনি বলেন, আমি বলব যে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন অত্যন্ত নিম্ন পর্যায়ে না পৌঁছা পর্যন্ত আমাদের সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

হাফপোস্ট

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন