হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার হঠাৎ ঢাকা সফর

সম্পর্কে দূরত্বের সুযোগ না দিতেই আলোচনায় ঢাকা-দিল্লি

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ভারতের মধ্যকার সম্পর্কে যাতে দূরত্ব তৈরি না হয়, সে বিষয়ে আলোচনা করবে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব। আজ দুপুরে ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠক করবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। বৈঠকে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা গতকাল দুদিনের সফরে ঢাকা এসেছেন। আজ বুধবার তার ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, গতকাল রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। সৌজন্য সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বার্তা পৌঁছে দেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। এরপর সেখান থেকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গতকালের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৮-১৯ আগস্ট ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ঢাকা সফরে রয়েছেন। সফরে অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নিয়ে আলোচনা হবে পথ খোঁজা হবে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার ঢাকা সফর নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন গতকাল বলেন, আজ (গতকাল) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে, কাল (আজ) আমার সঙ্গে দেখা হবে।

পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কাল (আজ) দেখা হবে দুপুরের দিকে। আমাদের এজেন্ডা যেহেতু দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন। সব সময় এজেন্ডার মধ্যে থাকে। আর সেই সঙ্গে কভিডের বিষয়ে ভারত বাংলাদেশ কীভাবে আরো সহযোগিতা জোরদার করতে পারে, তা আলোচনা হবে। এরই মধ্যে তারা (ভারত) কিছু সাহায্যও পাঠিয়েছিল। এখন তারা ভ্যাকসিন ডেভেলপ করছে। সুতরাং আমরা একে অন্যকে তথ্য দিয়ে পরিস্থিতি সম্পর্কে হালনাগাদ থাকতে পারি।

তিনি বলেন, এছাড়া তিনি (হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা) এর আগে মাস ছয়েক আগে এসেছিলেন। এর মধ্যে বেশকিছু অগ্রগতি হয়েছে, কাজ হয়েছে। 

ট্রান্সশিপমেন্টের কিছু কাজ হয়েছে। এছাড়া রেলওয়ের বিভিন্ন রকমের সহযোগিতার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়েছে। সেসব বিষয়ে আমরা আলোচনা করব। সামনে আরো কী করা যায়।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকার পর রেঙ্গুন সফর প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা বিভিন্ন সময়ে বলেছে যে তারা আমাদের সহযোগিতা করবে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকেও তারা বিভিন্নভাবে সাহায্য করছে। যাতে করে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন শিগগিরই শুরু হতে পারে। যদি ব্যাপারে তাদের দিক থেকে কোনো হালনাগাদ তথ্য থাকে আমরা জানতে পারব। আর আমরা কোন পর্যায়ে রয়েছি, তার হালনাগাদ দেব।

সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এখানে তেমন কিছু জল্পনা করার সুযোগ নেই। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক অনেক গভীর। সাম্প্রতিক সময়ে দেখেছি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নানা রকমের জল্পনাপ্রসূত প্রতিবেদন এসেছে। সেগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করব। আমাদের মধ্যে যাতে দূরত্ব না থাকে, সে বিষয়ে আমরা অলোচনা করব।

ভারতের প্রাদেশিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, গণমাধ্যম আমাদের দেশেও স্বাধীন, তাদের দেশেও স্বাধীন। আজকাল যেহেতু ইলেকট্রনিক মিডিয়া যথেষ্ট সচল আছে এবং নানান রকমের পোর্টাল আছে, তাদের গ্রহণযোগ্যতা হয়তো সে রকম নেই। আমরা সেগুলো আলোচনা করব, যাতে এগুলোকে নিরুৎসাহিত করতে পারি। এগুলো যাতে আমাদের সম্পর্কে কোনো রকম প্রভাব না ফেলতে পারে।

করোনা পরিস্থিতি ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা প্রস্তাব দেব আমাদের এখানে যদি সুযোগ থাকে, অক্সফোর্ডের প্রতিষ্ঠান যারা ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে, তাদের সঙ্গে আমরা লন্ডন মারফত যোগাযোগ করেছি। এখন ভারতীয় বিভিন্ন ভ্যাকসিন উৎপাদক, তারা এটার মুহূর্তে ব্যবসায়িক দিকটা হয়তো দেখছে। বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন