
মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের সময়েও বিশ্বকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে কাজ করছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, এ কাজ সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি উপদেষ্টা নিয়েছেন। দেশে শিল্পায়নকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন অর্থনৈতিক জোন তৈরির কাজ চলছে। বিশেষ করে ভারত, চীন, জাপান—এ দেশগুলোকে দেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে।
গতকাল বিইআই ও ইয়ুথ পলিসি ফোরামের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘তারুণ্যের সাথে, সংস্কারের পথে’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন। আলোচনার বিষয় ছিল ‘করোনা মহামারীর সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি কী হওয়া উচিত’।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ইয়ুথ পলিসি ফোরামের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. আখতার মাহমুদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী ফারুক সোবহান।আয়োজনের গণমাধ্যম সহযোগী বণিক বার্তা।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিল্প উন্নয়ন করতে পারলেই আমাদের কর্মসংস্থান ও রফতানি বাড়বে। দেশের মানুষের অভ্যন্তরীণ চাহিদার সঙ্গে আর্থসামাজিক উন্নতি হবে। সেক্ষেত্রে বেপজা যথেষ্ট অবদান রেখে যাচ্ছে। এখানে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারী আসছে। বিনিয়োগ হচ্ছে এবং বিনিয়োগের চাহিদা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন বিশ্বের অনেক দেশে বাংলাদেশে বিনিয়োগ লাভজনক মনে করে। যারা আমাদের এখানে বিনিয়োগ করেছে তার অতীতেও অনেক লাভবান হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্র নীতি ছিল সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়। তিন বছরে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছে। তার রেখে যাওয়া আদর্শ আমাদের পথচলা। তিন বছরে বিভিন্ন দেশে ১৬টি মিশন স্থাপন করা হয়। এরপর যেসব মিশন প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে, তা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে। আমরা বলতে পারি, পররাষ্ট্রনীতি অনেকদূর এগিয়েছে। গত ৫০ বছরেও বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি।
ভারত বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে আমরা ভারতকে পাশে পেয়েছি। পাশাপাশি দুটি রাষ্ট্র অবস্থানের কারণে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়, বিশেষ করে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড। এরই মধ্যে আমরা সীমান্ত হত্যাকাণ্ড কমিয়ে এনেছি। বর্তমান সরকারের সময়ে ভারত, জাপান, চীন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক অনেক বেশি। তিনি আরো বলেন, ভারতের সঙ্গে চীনের যে ঝামেলা চলছে এটা নতুন নয়। তাদের দুই দেশের মধ্যে যে সমস্যা, সেই কারণে বাংলাদেশে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।
বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের কার্যকরী সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, সামগ্রিকভাবে বিশ্বের অর্থনীতির আকার বাড়ছে ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপানের মতো দেশগুলোতে। এছাড়া চীনকে কেন্দ্র করে একটি বড় অর্থনীতি জোন তৈরি হচ্ছে। এটাকে লক্ষ রেখে আমাদের এখানে কাজ করতে হবে। উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে কীভাবে আরো বেশি যোগাযোগ স্থাপন করতে পারি, সেই বিষয়ে এখনই আমাদের ভাবা দরকার।