প্রতি সপ্তাহে বিশ্বে নতুন কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হচ্ছে প্রায় ১০ লাখ। এ অবস্থায় হাসপাতালগুলোয় অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটরের সংকট দেখা দেয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। কভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে যাদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা প্রকট থাকে, তাদের প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার জন্য অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর ব্যবহার করা হয়। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাডহ্যানম গেব্রেয়েসুস বলেছেন, ‘বর্তমানে ডিভাইসটির চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম। এ কারণে অনেক দেশকেই অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর সংগ্রহ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
টেড্রোস জানান, ডব্লিউএইচও এরই মধ্যে বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারারের কাছ থেকে ১৪ হাজার অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর কিনেছে এবং শিগগিরই সেগুলো ১২০টি দেশে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। তিনি আরো জানান, সংস্থাটি আগামী ছয় মাসে প্রায় ১০ কোটি ডলার মূল্যের আরো ১ কোটি ৭০ লাখ কনসেন্ট্রেটর কিনবে।
গতকাল পর্যন্ত বিশ্বে কভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৪ লাখ। দিন দুয়েকের মধ্যেই এ সংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছে ডব্লিউএইচও। এখন পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৪ লাখ ৮০ হাজার মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রে কভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। দেশটিতে বুধবার ৩৭ হাজার ৯৪৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যা সেখানে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যা। এছাড়া গত ২৬ এপ্রিলের পর বুধবারের সংখ্যাই সর্বোচ্চ। ওইদিন রেকর্ড ৪৮ হাজার ৫২৯ জন কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে।
ডব্লিউএইচওর জরুরি কর্মসূচির প্রধান ড. মাইক রিয়ান বলেছেন, লাতিন আমেরিকার অনেক দেশেই গত সপ্তাহে কভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি বলব লাতিন আমেরিকায় পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। এসব দেশে সংক্রমণ এখনো সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেনি।’
লাতিন আমেরিকায় করোনার কারণে প্রাণহানির সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছে। আর সংক্রমণের সংখ্যা এক মাস আগের ৬ লাখ ৯০ হাজারের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়ে ২০ লাখে উন্নীত হয়েছে।
বুধবার মেক্সিকোতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক কভিড-১৯ রোগী মারা গেছে। এদিন ৯৪৭ জন প্রাণ হারিয়েছে। সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯২ জন মারা যায় চলতি মাসের ৩ তারিখে। দেশটিতে শনাক্ত হওয়া কভিড-১৯ রোগীর মোট সংখ্যা ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৪৭।
চীনের বেইজিংয়ে গণহারে করোনা পরীক্ষায় নতুন করে ১৯ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জন বেইজিংয়ের বাসিন্দা। একজন প্রতিবেশী রাজ্য হেবেইয়ের অধিবাসী। আর বাকি পাঁচজন দেশের বাইরে থেকে আসা পর্যটক।
যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার স্বেচ্ছাসেবীরা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির একটি পরীক্ষামূলক প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। এদিকে করোনাভাইরাসের বিভিন্ন হটস্পট থেকে নিউজিল্যান্ডের নাগরিকদের দেশে ফেরা নিয়ে কিছু মানুষ প্রতিবাদ করেছে। তারা মনে করছে, এতে করোনার প্রকোপ আরো বেড়ে যেতে পারে। প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর নেদারল্যান্ডসে পতিতালয়গুলো ১ জুলাই থেকে খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।