২০২০-২১ বিপণন বর্ষ

খরায় ইউক্রেনে গম উৎপাদন কমবে ২৭ লাখ টন

বণিক বার্তা ডেস্ক

ইউক্রেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ খাদ্যশস্য উৎপাদনকারী দেশ। এর মধ্যে গম উৎপাদন রফতানির বৈশ্বিক বাণিজ্যে দেশটির অবস্থান বেশ দৃঢ়। চলতি ২০১৯-২০ বিপণন বর্ষে (জুলাই-জুন) দেশটিতে গমসহ অন্যান্য শস্য উৎপাদনে চাঙ্গা ভাব বজায় রয়েছে। তবে আগামী বিপণন বর্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশটিতে গমের উৎপাদনে নিম্নমুখী প্রবণতা পড়তে পারে। দেশটির প্রধান গম উৎপাদনকারী অঞ্চলের একটি বড় অংশে খরা শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করায় সময়ে দেশটিতে খাদ্যপণ্যটির উৎপাদন কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্র খবর রয়টার্স ওয়ার্ল্ডগ্রেইনডটকম।

ইউক্রেনের আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রের কৃষি বিভাগের প্রধান তেতিয়ানা আদামেঙ্কো বলেন, ২০২০-২১ বিপণন বর্ষে দেশটিতে সব মিলিয়ে কোটি ৩৩ লাখ টন গম উৎপাদন হতে পারে। চলতি মৌসুমে দেশটিতে কৃষিপণ্যটি উৎপাদনের প্রাক্কলন ধরা হয়েছে কোটি ৬০ লাখ টন। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে পণ্যটির উৎপাদন কমে যেতে পারে ২৭ লাখ টন।

তিনি বলেন, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চল গম চাষের জন্য প্রসিদ্ধ। কিন্তু চলতি বছর দেশটির অঞ্চলটিজুড়ে মাত্রাতিরিক্ত খরা ভাব বিরাজ করছে। পরিস্থিতি আগামী বছর অবাধি বিরাজমান থাকতে পারে। এতে আগামী বিপণন বর্ষে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের গম উৎপাদনে মন্দা ভাব পড়তে পারে, যা ইউক্রেনের সামগ্রিক গম উৎপাদন কমিয়ে আনতে মূল কারণ হিসেবে কাজ করতে পারে।

ইউক্রেনকে বলা হয় ইইউর শস্যভাণ্ডার। ভুট্টা, গম, যব, সূর্যমুখী তেল প্রভৃতি শস্য উৎপাদন রফতানিতে দেশটি অন্যতম শীর্ষস্থানীয়। গম উৎপাদনের বৈশ্বিক তালিকায় দেশটির অবস্থান সপ্তম। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে প্রতি বছর দেশটি থেকে প্রচুর গম আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি হয়। খাদ্যপণ্যটির শীর্ষ রফতানিকারক দেশের তালিকায় ইউক্রেন চতুর্থ। দেশটির অর্থ, বণিজ্য কৃষি উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বিপণন বর্ষে দেশটিতে মোট কোটি ৫০ লাখ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হতে পারে।

উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে চলতি বিপণন বর্ষে দেশটি থেকে শস্য রফতানিতেও চাঙ্গা ভাব বজায় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ বিপণন বর্ষের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশটি থেকে সব মিলিয়ে কোটি ১৪ লাখ ৭০ হাজার টন খাদ্যশস্য আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি হয়েছে। আগের বিপণন বর্ষের একই সময়ের তুলনায় যা ১৯ শতাংশ বেশি। ২০১৮-১৯ বিপণন বর্ষের পুরোটাজুড়ে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে মোট কোটি টন শস্য রফতানি হয়েছিল।

  সময়ে ইউক্রেন থেকে মোট রফতানি হওয়া শস্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রফতানি হয়েছে ভুট্টা। দেশটির অর্থ, বণিজ্য কৃষি উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সময়ে রফতানি হওয়া শস্যের মধ্যে গম রফতানি হয়েছে কোটি ৯১ লাখ ৯০ হাজার টন। ভুট্টা রফতানি হয়েছে কোটি ৬৮ লাখ ৮০ হাজার টন। ইউক্রেন বিশ্বের চতুর্থ শীর্ষ ভুট্টা রফতানিকারক দেশ। সময়ে দেশটির জব রফতানির পরিমাণ বেড়ে ৪৭ লাখ ২০ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে।

চলতি বিপণন বর্ষের বাকি সময়েও দেশটি থেকে খাদ্যশস্য রফতানিতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকতে পারে বলে প্রত্যাশা করছে ইউক্রেন। দেশটির সরকারি প্রাক্কলন অনুযায়ী, ২০১৯-২০ বিপণন বর্ষের পুরোটাজুড়ে ইউক্রেন থেকে সম্মিলিত শস্য রফতানি বেড়ে কোটি ২০ লাখ থেকে কোটি ৫০ লাখ টনের রেকর্ড ছুঁতে পারে। এর মধ্যে গম রফতানির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে কোটি ৯০ লাখ থেকে দুই কোটি টনের মধ্যে।

তবে আগামী বিপণন বর্ষে শস্য রফতানি কমিয়ে আনতে পারে দেশটি। ইউক্রেনের কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী তারাস ভায়মোতেসকি সম্প্রতি জানিয়েছেন, চলতি বছরের শুরুতেই নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর সম্মুখীন হয়েছে পুরো বিশ্ব। অবস্থার মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার উপার্জন অভ্যন্তরীণ খাদ্যনিরাপত্তার মধ্যে সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা করবে ইউক্রেন। লক্ষ্যে আগামী বিপণন বর্ষে শস্য রফতানিতে সীমা টানতে পারে দেশটির সরকার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন