কুমিল্লা ও পিরোজপুর থেকে চার রোহিঙ্গা যুবককে আটক করেছে পুলিশ। গত
রোববার রাতে তাদের আটক করা হয়।
জানা গেছে, গত রোববার রাতে
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ধোরকড়া বাজার ও চিওড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন
রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে আটক করে
কুমিল্লা র্যাব-১১, সিপিসি-২-এর একটি দল। এ সময় মানব পাচারকারী দলের
তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
আটক রোহিঙ্গারা হলেন ১৯ নং ট্যাংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প নং-১৯-এর মোহাম্মদ আমির হোসেনের ছেলে মো. জাহেদ হোসেন (২৫), কুতুপালং রোহিঙ্গা
ক্যাম্প-সি/৩-এর মো. হাকিম শরিফের ছেলে মো.
রফিক (৩৭) ও কক্সবাজারের
১৮ নং বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক নারী।
গতকাল দুপুরে নগরীর শাকতলাস্থ র্যাব-১১ সিপিসি-২-এর কার্যালয়ে
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কোম্পানি অধিনায়ক মেজর তালুকদার নাজমুছ।
তিনি জানান, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার
ধোরকড়া বাজার ও চিওড়া এলাকায় নারীসহ বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে বিদেশে পাচারের উদ্দেশে
জড়ো করা হয়েছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে
ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্রের তিন
সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার
কাপড় চোতালী গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে মো. আব্দুর রহিম ওরফে রুবেল
(২৫), ফজলুল হকের ছেলে
নুরুল হক (২৯), ডিমাতলী গ্রামের
কামাল উদ্দিনের ছেলে কাজী ফয়সাল আহাম্মেদ ওরফে রনি (৩২)। এ সময় তাদের জিম্মা থেকে তিন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে মেজর তালুকদার নাজমুছ
সাকিব আরো জানান, গ্রেফতারকৃতরা
সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারের
বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচারের
উদ্দেশে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে বাংলাদেশী
পাসপোর্ট তৈরি করে মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার করে আসছিল। এ ব্যাপারে
চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা হয়েছে।
এদিকে গত রোববার রাতে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া থেকে মো. জামাল (২১) নামে এক
রোহিঙ্গাকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ
(ডিবি)।
পিরোজপুর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক হাচনাইন পারভেজ জানান, জামাল পিরোজপুর
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্টের আবেদন করার পর ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে যান।
কিন্তু ফিঙ্গার প্রিন্ট না মেলায় তিনি চলে যান। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে আটক
করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি তথ্য গোপনের বিষয়টি স্বীকার করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে জামাল জানান, তিনি মিয়ানমারের
নাগরিক। দুই ভাই ও তিন বোন নিয়ে ২০১৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসেন। এরপর
তারা কক্সবাজারের বালুখালী ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। দালালের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার
জন্য পাসপোর্ট করতে পিরোজপুর আসেন তিনি।