প্রতি বছরান্তে হ্রাস পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কয়লা উত্তোলন। এ ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে দেশটির খনিগুলো থেকে সব মিলিয়ে ৫৮ কোটি ৭০ লাখ শর্ট টন (প্রতি শর্ট টনে ২ হাজার পাউন্ড) কয়লা উত্তোলন হতে পারে, যা ১৯৭০ সালের প্রথম দিকের পর দেশটিতে জ্বালানি পণ্যটির সর্বনিম্ন উত্তোলন। মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ইআইএ) সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস করা হয়েছে। খবর এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্ল্যাটস।
এদিকে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন আগের বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমে ৬০ কোটি শর্ট টনের নিচে নেমে আসার জোরালো আশঙ্কা রয়েছে।
ইআইএর এ পূর্বাভাস সত্য হলে তা হবে ১৯৭৩ সালের পর দেশটিতে জ্বালানি পণ্যটির সর্বনিম্ন উত্তোলন।
ইআইএর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে সব মিলিয়ে ৫৯ কোটি ৬০ লাখ শর্ট টন কয়লা উত্তোলন হতে পারে।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৯ সালের কয়লা উত্তোলনসংক্রান্ত চূড়ান্ত বার্ষিক প্রতিবেদন এখনো প্রকাশিত হয়নি।
তবে প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, গত বছর দেশটির খনিগুলো থেকে জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন সব মিলিয়ে ৬৯ কোটি শর্ট টনে দাঁড়াতে পারে।
ইআইএ জানিয়েছে, ১৯৭৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৫৯ কোটি ৯০ লাখ শর্ট টন কয়লা উত্তোলন হয়েছিল।
এরপর দেশটিতে পণ্যটির উত্তোলনে এত বড় মন্দা ভাব আর দেখা যায়নি।
সেই হিসাবে চলতি বছর দেশটিতে ১৯৭৩ সালের তুলনায় কম কয়লা উত্তোলন হতে পারে।
অন্যদিকে ২০১৩ সাল থেকে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের কয়লা উত্তোলনের বার্ষিক হিসাব প্রকাশ করে আসছে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্ল্যাটস।
ওই
সময়ের পর থেকে এবারই প্রথমবারের মতো দেশটিতে জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন ৬০ কোটি শর্ট টনের নিচে নেমে আসতে যাচ্ছে।
ইআইএর সাম্প্রতিক এ শর্ট টার্ম এনার্জি আউটলুক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, উত্তোলনের সঙ্গে সঙ্গে এ সময় যুক্তরাষ্ট্র থেকে কয়লার রফতানি খাতেও নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় থাকতে পারে।
২০১৯ সালে দেশটি থেকে সব মিলিয়ে ৯ কোটি ২৪ লাখ শর্ট টন কয়লা রফতানি হতে পারে।
চলতি বছর তা আরো কমে ৯ কোটি ৬০ লাখ টনে নামতে পারে।
আগামী বছরে জ্বালানিটির রফতানি আরো কমে ৮ কোটি ৫০ লাখ টনে নামার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে বলে পূর্বাভাস করেছে ইআইএ।
এছাড়া চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ খাতসহ বিভিন্ন খাতে কয়লার ব্যবহার হ্রাস পেতে পারে।
তথ্যমতে, ২০১৯ সালের তুলনায় ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ কমে চলতি বছর দেশটির বিদ্যুৎ খাতে জ্বালানিটির ব্যবহার দাঁড়াতে পারে ৪৬ কোটি ৫০ লাখ শর্ট টনে।
বিদ্যুৎ খাতসহ এ বছর দেশটিতে পণ্যটির সম্মিলিত ব্যবহার দাঁড়াতে পারে ৫১ কোটি ৬০ লাখ শর্ট টনে, আগের বছরের তুলনায় যা ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ কম।
তবে উৎপাদন ও রফতানি রেকর্ড কমলেও আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি পণ্যটির ব্যবহার কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে ইআইএ।
ইআইএর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চলতি বছর ছাড়াও আগামী বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে কয়লার পরিবর্তে প্রাকৃতিক গ্যাস ও সৌর, জল ও বায়ুশক্তির মতো নবায়নযোগ্য শক্তির চাহিদা ও ব্যবহার বৃদ্ধি পেতে পারে। চলতি বছর দেশটিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের উত্তোলন বেড়ে দৈনিক গড়ে ৯ হাজার ৪২০ কোটি ঘনফুটে উন্নীত হতে পারে। তবে চাহিদার তুলনায় জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন বেশি হওয়ায় অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ বেড়ে যেতে পারে, যা দামে বাড়তি চাপ তৈরি করতে পারে। এ কারণে আগামী বছর পণ্যটির উত্তোলন কিছুটা কমে দৈনিক গড়ে ৯ হাজার ২৬০ কোটি ঘনফুটে নামতে পারে।
