যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসৃজন গত বছরের
নভেম্বরে চার বছরের সর্বোচ্চ পতন হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে দেশটির শ্রম বিভাগের
জব ওপেনিংস অ্যান্ড লেবার টার্নওভার সার্ভের
(জেওএলটিএস)
মাসিক প্রতিবেদনে। খবর রয়টার্স।
জেওএলটিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির
কর্মসৃজন নভেম্বরে ৫ লাখ ৬১ হাজার কমে ৬৮ লাখে দাঁড়িয়েছে। ২০১৫ সালের আগস্টের পর
এটি সবচেয়ে বড় পতন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির কর্মসৃজন ২০১৮ সালের মার্চের পর
সর্বনিম্নে পৌঁছে।
এদিকে শূন্য পদ হ্রাস ও মাঝারি গোছের
নিয়োগ নিয়োগদাতাদের কর্মী চাহিদায় হ্রাস টানার লক্ষণ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট
অর্থনীতিবিদরা। এ সম্পর্কে এমইউএফজির প্রধান অর্থনীতিবিদ ক্রিস রুপকি বলেন, শ্রমবাজার
সুসময় হারাতে শুরু করেছে বলে মনে হচ্ছে। এ পরিস্থিতি এরই মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে
পৌঁছেছে। চাকরির আশায় যারা দিন গুনছেন,
তারা হয়তো তরী হারিয়ে তীরে বসে আছেন।
২০১৮ সালের শেষের দিকে দেশটির
কর্মসৃজন রেকর্ড ৭৬ লাখ ৩০ হাজারে পৌঁছার পর গত বছর খাতটি ক্রমে সংকুচিত হতে থাকে।
নভেম্বরের কর্মসৃজন প্রধানত বেসরকারি খাতের কারণে কমেছে। মাসটিতে খাতটির ৫ লাখ ২০
হাজার পদে কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ সময় খুচরা ও নির্মাণ শিল্পে কর্মখালি হ্রাসের
মাত্রা ছিল প্রকট। তবে মাসটিতে সরকারি কর্মসৃজন কমেছে ৪২ হাজার।
এদিকে কর্মসৃজন হার নভেম্বরে আগের
মাসের তুলনায় কমে ৪ দশমিক ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অক্টোবরে তা ছিল ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
মাসটিতে নিয়োগ অক্টোবরের ৫৭ লাখ ৮০ হাজার থেকে বেড়ে ৫৮ লাখ ২০ হাজারে পৌঁছে। তবে
নিয়োগ হার নভেম্বরে ৩ দশমিক ৮ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকে।
কর্মসৃজন কমার বিষয়টি ডিসেম্বরে
কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধি হ্রাসের পর আগামীতে তেমন একটা চাঙ্গা না হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
ডিসেম্বরে খামারবহির্ভূত খাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার। তবে খাতটির
ডিসেম্বরের বৃদ্ধির পরিমাণ নভেম্বরের তুলনায় কম। নভেম্বরে তা ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার।
অন্যদিকে চলতি বছর দেশটির শ্রমবাজার
আরো শিথিল হয়ে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন পেনসিলভানিয়ার মুডি’স
অ্যানালাইটিকসের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সোফিয়া কোরোপেকিজ। তবে চলতি বছর দেশটির নিট
কর্মসৃজন এক লাখের নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা থাকলেও বছরের দ্বিতীয়ার্ধে নিট কর্মী
ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।
নভেম্বরে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়েছে ৩৫
লাখ কর্মী। নভেম্বর নিয়ে টানা তিন মাস এর হার ছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ। স্বেচ্ছায়
চাকরি ছাড়াকে শ্রমবাজারের শক্তিশালী অবস্থার নির্দেশক করে বলে মনে করেন
নীতিনির্ধারক ও অর্থনীতিবিদরা।
নভেম্বরে খুচরা খাতের প্রায় ১ লাখ ১৮
হাজার কর্মী চাকরি ছেড়েছেন। মাসটিতে পাইকারি ব্যবসা ও অপরিহার্য পণ্য
ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পের কর্মীদেরও স্বেচ্চায় চাকরি ছাড়ার হার বেড়েছে।
এদিকে আগের মাসের তুলনায় নভেম্বরে
কর্মী ছাঁটাই কমে ১৭ লাখ ৫০ হাজারে পৌঁছেছে। অক্টোবরে তা ছিল ১৮ লাখ। এছাড়া
নভেম্বরে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী ছাঁটাইও কমেছে। মাসটিতে কর্মী ছাঁটাইয়ের
হার অক্টোবরের ১ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমে ১ দশমিক ১ শতাংশে নেমেছে।